মোবাইল দিয়ে ঘরে বসে ইউটিউব ভিডিও এডিটিং শিখুন ফ্রিতে
প্রিয় পাঠক, আমাদের এই মোবাইল দিয়ে ঘরে বসে ইউটিউব ভিডিও এডিটিং শিখুন ফ্রিতে
আর্টিকেলে আসার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই। আজকের এই আর্টিকেলে
আমরা অনেক কিছু আলোচনা করব যা আপনাদের অনেক কাজে দিবে।
আজকের এই আর্টিকেলটি পড়লে আপনি কিভাবে আপনার হাতে থাকা মোবাইল ফোন দিয়ে ভিডিও
এডিটিং শিখতে পারবেন তার সবকিছু জানতে ও বুঝতে পারবেন। তাহলে চলুন দেরি না করে
শুরু করা যাক-
পোস্ট সূচিপত্রঃ মোবাইল দিয়ে ঘরে বসে ইউটিউব ভিডিও এডিটিং শিখুন ফ্রিতে
- মোবাইল দিয়ে ঘরে বসে ইউটিউব ভিডিও এডিটিং শিখুন ফ্রিতে
- ইউটিউব এর জন্য কিছু সেরা ফ্রি মোবাইল ভিডিও এডিটিং অ্যাপস
- CapCut App: নতুনদের জন্য সেরা ফ্রি অ্যাপ
- KineMaster: অ্যাডভান্সড এডিটিং এর জন্য জনপ্রিয়
- InShot: দ্রুত ও সহজ এডিটিংয়ের জন্য
- মোবাইল দিয়ে ভিডিও এডিটিং শেখার সহজ ধাপগুলো
- প্রজেক্ট সেটআপ ও রেশিও নির্বাচন
- ট্রিম, কাট ও স্প্লিট কিভাবে করতে হয়?
- ট্রানজিশন (Transition) যুক্ত করার সঠিক নিয়ম
- অডিও এডিটিং করুন খুব সহজেই
- টেক্সট ও টাইটেল অ্যানিমেশন ও সাবটাইটেল
- কালার কারেকশন (Color Correction) করার উপায়
- অ্যাডভান্সড মোবাইল এডিটিং টেকনিক
- ফ্রিতে শেখার সেরা উপায় এবং রিসোর্স
- শেষ কথাঃ মোবাইল দিয়ে ঘরে বসে ইউটিউব ভিডিও এডিটিং শিখুন ফ্রিতে
মোবাইল দিয়ে ঘরে বসে ইউটিউব ভিডিও এডিটিং শিখুন ফ্রিতে
মোবাইল দিয়ে ঘরে বসে ইউটিউব ভিডিও এডিটিং শিখুন ফ্রিতে এই কথাটি শুনে আপনার মনে
হতে পারে যে এখনকার সময়ে এটি ফ্রিতে শেখা সম্ভব কি না। আমরা বলব হ্যাঁ সম্ভব।
এর জন্য দরকার আপনার ধৈর্য এবং কঠিন পরিশ্রম। আর সবথেকে যেটি বেশি প্রয়োজন সেটি
হলো সঠিক গাইডলাইন। সঠিক গাইডলাইন দেব আমরা এবং সেই অনুযায়ী কাজ করার দায়িত্ব
আপনাদের। ইউটিউব এখন শুধু বিনোদনের মাধ্যম নয়, এটি লক্ষ লক্ষ মানুষের আয়ের
প্রধান উৎস। তবে সফল ইউটিউবর হওয়ার জন্য ভালো কন্টেন্ট তৈরির পাশাপাশি প্রয়োজন
প্রফেশনাল মানের ভিডিও এডিটিং।
আরো পড়ুনঃ মোবাইল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শিখবো
অনেকে মনে করেন, ভিডিও এডিটিং এর জন্য একটি ব্যয়বহুল কম্পিউটার বা ল্যাপটপের
প্রয়োজন। তবে আপনার হাতের স্মার্টফোনটি দিয়েই প্রফেশনাল ভিডিও এডিটিং শেখা এবং
করা সম্ভব এবং তা সম্পূর্ণ ফ্রিতে! এই বিস্তারিত গাইডে, আমরা আপনাকে ধাপে ধাপে
দেখাবো কীভাবে শুধুমাত্র আপনার মোবাইল দিয়ে ঘরে বসে ইউটিউব ভিডিও এডিটিং শিখুন
ফ্রিতে এবং আপনার চ্যানেলকে পরবর্তী ধাপে নিয়ে যান। আপনি চাইলে খুব সহজে এবং
অল্প সময়ে ইউটিউব ভিডিও এডিটিং শিখতে পারেন,
কম্পিউটারের চেয়ে মোবাইল দিয়ে ভিডিও এডিটিং শুরু করার বেশ কিছু কারণ রয়েছে,
যেমন কম্পিউটার এ ভিডিও এডিটিং শিখতে গেলে একটি ভালো মানের পিসি/ল্যাপটপের জন্য
৪০,০০০+ টাকা প্রয়োজন। কিন্তু মোবাইল এ আপনার হাতের স্মার্টফোনই যথেষ্ট। তারপর
কম্পিউটার এ সফটওয়্যার ইনস্টলেশন, ইন্টারফেস জটিল হতে পারে কিন্তু মোবাইল এ
অ্যাপ ইন্টারফেস সহজ, দ্রুত শেখা যায়। তাই মোবাইল এ খুব সহজ কিছু সফটওয়্যার এর
মাদ্ধমে ভিডিও এডিটিং এর কাজ অল্প সময়ে ফ্রীতে শেখা যাই।
ইউটিউব এর জন্য কিছু সেরা ফ্রি মোবাইল ভিডিও এডিটিং অ্যাপস
ফ্রীতে ইউটিউবে ভিডিও এডিটিং শেখার জন্য বর্তমানে বাজারে সেরা এবং সবচেয়ে
জনপ্রিয় তিনটি ফ্রি অ্যাপ সম্পর্কে জেনে নিন। এই অ্যাপগুলো ব্যবহার করেই আপনি
আপনার ইউটিউব ভিডিও এডিটিং ফ্রিতে করতে পারবেন। আর সবথেকে বড় কথা হলো আপনি
আপনার হাতে থাকা মোবাইল ফোন দিয়েই এই সমস্ত অ্যাপে আপনার পছন্দের ভিডিও এডিটিং
করতে পারবেন কোনো প্রকার ঝামেলা ছাড়াই। এর জন্য আপনাকে বিশেষ কোনো প্রশিক্ষণ
নিতে হবে না।
আমাদের দেওয়া গাইডলাইন ফলো করেন তাহলেই দেখবেন আপনি অনেক সহজেই এবং অল্প দিনের
মধ্যেই আপনি এক্সপার্টদের মতো ভিডিও এডিটিং করতে পারবেন। আমরা যে তিনটি অ্যাপের
কথা বলছি সেগুলো অনেক জনপ্রিয় অ্যাপ। এগুলো অ্যাপ দিয়েই প্রায় অনেক কন্টেন্ট
ক্রিয়েটর তাদের ভিডিও এডিট করে যাচ্ছে। বিশেষ করে দেখবেন বিভিন্ন সোশ্যাল
মিডিয়াতে যে সমস্ত ভিডিও আপলোড হয় সেগুলো বেশিরভাগই এই তিনটি অ্যাপ দিয়ে এডিটিং
করা হয়ে থাকে।
CapCut App: নতুনদের জন্য সেরা ফ্রি অ্যাপ
এই অ্যাপটি আপনি আপনার মোবাইলের প্লে স্টোর থেকে ডাউনলোড করতে পারবেন। বর্তমানে
ইউটিউব শর্টস, রিলস বা লম্বা ভিডিও সবকিছুর জন্য এটি সবচেয়ে জনপ্রিয়
অ্যাপ।ওয়াটারমার্ক নেই, ভিডিও এক্সপোর্ট করার পর কোনো ওয়াটারমার্ক থাকে না।
আমরা চাইলেই এই অ্যাপে আমাদের ভিডিওর জন্য অটো-ক্যাপশন জেনারেট করতে পারব,
আমাদের ভিডিও এডিট করার সময় একটা কমন সমস্যা হয়ে থাকে সেটি হলো ব্যাকগ্রাউন্ড।
আমরা আমাদের মনের মতো ব্যাকগ্রাউন্ড পায় না।এখানে আপনি আপনার ইচ্ছামত যে কোনো
ব্যাকগ্রাউন্ড ব্যবহার করতে পারবেন এবং খুব সহজেই।
এবং বর্তমানে বিভিন্ন ভিডিওতে দেখবেন যে অনেক অ্যাডভান্স ফিচার ব্যবহার করে
থাকে যেগুলো আপনি এই অ্যাপে খুব সহজেই AI এর মাধ্যমে খুব কম সময়ের মধ্যে করে
ফেলতে পারবেন। এছাড়াও এই অ্যাপে আপনি প্রতিদিন নিত্য নতুন ট্রেন্ডিং মিউজিক ও
চোখ জুড়ানো ইফেক্ট পাবেন যেগুলো আপনি শুধুমাত্র এক ক্লিকের মাধ্যমেই আপনার
ভিডিওতে যুক্ত করতে পারবেন। এর সাথে আপনি চাইলেই সাউন্ড ইফেক্ট এবং ট্রানজিশন
ব্যবহার করতে পারবেন যেগুলো আপনার কনটেন্টগুলো অল্প সময়েই ভাইরাল করতে সাহায্য
করে। তাহলে আর দেরি না করে এই অ্যাপটি আপনার মোবাইল ফোনে ডাউনলোড করে আজ থেকেই
ভিডিও এডিটিং শুরু করে দিতে পারেন।
KineMaster: অ্যাডভান্সড এডিটিং এর জন্য জনপ্রিয়
আমরা যারা ভিডিও এডিটিং সম্পর্কে একটু ধারণা রাখি বা ভিডিও এডিটিং সম্পর্কে
টুকটাক বুঝি তাদের জন্য এই KineMaster অ্যাপটা ভালো। এই অ্যাপের সাহায্যে আপনি
আপনার ভিডিওটি একটি প্রো লেভেলের মতো এডিট করতে পারবেন। এই অ্যাপের মাধ্যমে
আপনি একসাথে অনেক গুলো লেয়ার, টেক্সট, ইমেজ নিয়ে কাজ করতে পারবেন এবং সেটা খুব
অল্প সময়ে এবং খুব সহজেই। যারা চান যে তাদের ভিডিওটা একটু প্রো লেভেলের মতো
দেখাতে তাদের জন্য এই অ্যাপটি বেস্ট একটা মাধ্যম হবে বলে আমরা মনে
করি।
এই অ্যাপের মধ্যে আপনি আরো বিশেষ কিছু সুবিধা পাবেন। মনে করেন আপনি বিদেশের
কোনো একটা ফেমাস জায়গায় আপনার ভিডিওটা শুট করতে চাচ্ছেন কিন্তু আপনি আছে
বাংলাদেশে। সেক্ষেত্রে আপনাকে আর কষ্ট করে বিদেশের সেই ফেমাস জায়গায় যেতে হবে
না। আপনি শুধুমাত্র আপনার একটা নির্দিষ্ট জায়গায় গ্রিন স্ক্রিন ব্যবহার করে
ভিডিও বানাবেন এবং এই অ্যাপ ব্যবহার করে ব্যকগ্রাউন্ড পরিবর্তন করে
ফেলবেন।
তাহলেই আপনার মনে হবে যে আপনি সেই বিদেশের ফেমাস জায়গায় ভিডিও করেছেন। এছাড়াও
রয়েছে অ্যাডজাস্টমেন্ট টুলস এর মাদ্ধমে কালার কারেকশন, ব্রাইটনেস, কন্ট্রাস্ট
এবং ভিগনেট যুক্ত করার মতো প্রফেশনাল টুলস। তবে এই অ্যাপে অনেক সুবিধা থাকলেও
এখানে একটি বড় অসুবিধা রয়েছে যেটা একটি বিরক্তিকর বলে মনে হয় আমাদের সকলের
কাছে। সেটা হলো ওয়াটারমার্ক। এই ওয়াটারমার্ক আমরা ফ্রি ভার্সনে সরাতে পারব না।
এই ওয়াটার মার্ক সরাতে হলে আমাদেরকে পেইড ভার্সন ব্যবহার করতে হবে। তা না হলে
এটি সম্ভব হবে না।
InShot: দ্রুত ও সহজ এডিটিংয়ের জন্য
আমরা অনেকেই আছি যারা এমনি বিনোদনের জন্য বা সময় কাটানোর জন্য ভিডিও তৈরি করে
থাকি। অথবা যাদের হাতে এই ভিডিও এডিটিং ভালো ভাবে করার সময় থাকে না তাদের জন্য
এই অ্যাপটি বেস্ট হবে বলে আমি মনে করি। এই অ্যাপে আমরা চাইলেই আমাদের
প্রতিদিনের তৈরিকৃত ব্লগ অনেক দ্রুত এডিটিং করতে পারব। আমরা অনেক সময় ভেবে পায়
না যে কোন সোশ্যল মিডিয়া প্লাটফর্মের ভিডিওর রেশিও কত।
তাদের জন্য এই অ্যাপ বেস্ট কারণ এখানে আপনি আপনার সোশ্যাল মিডিয়ার প্লাটফর্মের
রেশিও অনুযায়ী সকল সাইজ পেয়ে যাবেন। আপনি আপনার ইউটিউব চ্যানেলের জন্য বানাতে
চাইলে সেখানে পাবেন (১৬ঃ৯), শর্টস বা রিলস এর জন্য (৯ঃ১৬) এবং ইন্সটাগ্রাম এর
জন্য (১ঃ১)। এগুলো রেশিও আপনি খুব সহজেই মাত্র এক ক্লিকের মাধ্যমেই করে ফেলতে
পারবেন। এছাড়াও আপনি এই অ্যাপ এর মাদ্ধমে বেসিক টুলস যেমন- ভিডিও ট্রিম
করা, স্প্লিট করা, ব্যাকগ্রাউন্ড যোগ করা এবং টেক্সট যুক্ত করার জন্য এটি
অত্যন্ত কার্যকর।
মোবাইল দিয়ে ভিডিও এডিটিং শেখার সহজ ধাপগুলো
উপরে আমরা যে তিনটি অ্যাপ নিয়ে আলোচনা করলাম সেগুলোর মধ্যে আপনি আপনার পছন্দ
মতো যে কোনো একটি অ্যাপ আপনার মোবাইলে ডাউনলোড করে ভিডিও এডিটিং শুরু করতে
পারবেন। তবে আপনি যে অ্যাপই ব্যবহার করেন না কেন ভিডিও এডিটিং করার কিছু মৌলিক
ধাপ আছে। সেগুলো ছাড়া আপনি ভিডিও এডটিং ভালো ভাবে করতে পারবেন না। আর এগুলো ধাপ
আপনাকে প্রত্যেকটা অ্যাপের মধ্যেই অবলম্বন করতে হবে।
কারণ এইগুলো ধাপ অনেক গুরুত্বপূর্ণ, এগুলো ছাড়া আপনি যদি আপনার ভিডিও এডিটিং
করেন তাহলে দেখবেন আপনার ভিডিওতে প্রোফেশনাল লুক আসবে না। তাই শুরুতে আপনি ঘরে
বসে আপনার হাতে থাকা মোবাইল ফোন দিয়ে সেই দক্ষতাগুলো অর্জন করুন। তাহলে দেখবেন
আপনার ভিডিও এডিটিং অনেকাংশে ভালো হবে। এখন প্রশ্ন হলো কি কি মৌলিক দক্ষতা
আমাদেরকে অর্জন করতে হবে? কোনো চিন্তার কারণ নেই আমরা সেই মৌলিক দক্ষতাগুলো
নিচের ধাপগুলোতে বর্ণনা করছি।
প্রজেক্ট সেটআপ ও রেশিও নির্বাচন
আমরা যেহেতু মোবাইল দিয়ে ঘরে বসে ইউটিউব ভিডিও এডিটিং শিখুন ফ্রিতে এই
আর্টিকেলে ইউটিউবের জন্য ভিডিও এডিটিং করা সম্পর্কে জানবো সেই জন্য শুরুতেই
আমাদের প্রথম দক্ষতা হবে প্রজেক্ট সেটআপ এবং রেশিও নির্বাচন করা। এখানে
আমাদেরকে জানতে হবে যে ইউটিউবের জন্য কোন রেশিওটা ভালো হবে। এবং আমাদের আগে
নিশ্চিত করতে হবে যে আমাদের ভিডিওটি কি লং ভিডিও নাকি শর্টস ভিডিও।
যদি ইউটিউবে লং ভিডিও পাবলিশ করতে চায় তাহলে তার জন্য রেশিও হবে (১৬ঃ৯) এবং যদি
শর্টস বা রিলস ভিডিওর জন্য হয় তাহলে সেটা হবে (৯ঃ১৬)। আমরা মূলত ইউটিউব ভিডিওর
জন্য এই দুটি রেশিও নির্বাচন করে কাজ করে থাকি। ইউটিউবের জন্য এই সঠিক ফ্রেমটা
নির্বাচন করা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। তাহলে আমরা ইউটিউবের জন্য দুটি রেশিও দেখলাম
সেটা হলো-
লং ভিডিও (Standard YouTube): 16:9
শর্টস/রিলস (YouTube Shorts): 9:16
আপনার মোবাইলে থাকা অ্যাপ ওপেন করুন একটি নতুন প্রজেক্ট তোইরি করুন এবং আপনার
শুট করা ফাইল বা রো-ফাইলগুলো ইম্পোর্ট করুন।
ট্রিম, কাট ও স্প্লিট কিভাবে করতে হয়?
প্রতিটি অ্যাপসেই কাজ করতে গেলে আপনাকে একটি বিষয় মাথায় রাখতে হবে সেটা হলো
ট্রিম, কাট ও স্প্লিট সম্পর্কে। এই সম্পর্কে আপনি যদি কোনো ধারণা না রাখেন বা
এই দক্ষতা অর্জন না করেন তাহলে আপনি ভিডিও এডিটিং ভালো ভাবে করতে পারবেন না। এই
জন্য ভিডিও এডিটিং করার পূর্বে আপনাকে এই বিষয়ে ভালো জ্ঞান রাখতে হবে। এটি মূল
এডিটিং প্রক্রিয়া, একটি ভিডিওকে মসৃণ ও আকর্ষণীয় করার জন্য এই ধাপটি সবচেয়ে
গুরুত্বপূর্ণ।
প্রতিটি ভিডিওর ক্ষেত্রেই আপনাকে এই তিনটি বিষয় নিয়ে কাজ করতে হবে। শুরুতেই
আমরা কথা বলি ট্রিম নিয়ে। আমরা ভিডিও শুটিং করার সময় অনেক শুট ভালো নেই আবার
অনেক শুট খারাপ হয়। সেই খারাপ শুট গুলো আমাদের দরকার হয় না। তখন সেই খারাপ
শুটগুলোকে বাদ দেওয়ার জন্য আমরা এই ট্রিম ব্যবহার করি। তারপরের স্টেপ হলো
স্প্লিট।
যখন কোনো ক্লিপের মাঝে ভুল থাকে বা দীর্ঘ বিরতি থাকে তখন সেই অংশটিকে আমাদের
আলাদা করতে হয় এবং স্প্লিট করে ডিলিট করে দিতে হয়। অর্থাৎ স্প্লিট এর কাজ হলো
ক্লিপের মাঝের ভুলগুলোকে স্প্লিট করে ডিলিট করা। আর তৃতীয়টি হলো গতিশীলতা যা
প্রতিটি ভিডিওকে আরো সুন্দর করে তোলে। এটি না একটি ভিডিওর কখনো পূর্ণতা হয় না।
এই জন্য এই ধাপটি অনেক ভালোভাবে করা উচিত। মনে রাখবেন, দ্রুত কাটআউট আপনার
ভিডিওকে আরো গতিশীল এবং এনগেজিং করে তোলে।
ট্রানজিশন (Transition) যুক্ত করার সঠিক নিয়ম
এই ট্রানজিশন এমন একটি জিনিষ বা হাতিয়ার যা আপনার ভিডিওকে আরো জাঁকজমক পূর্ণ
করে তোলে। আপনি যদি এর সঠিক ব্যবহার করতে পারেন তাহলে আপনার ভিডিওটি অনেক প্রো
লেভেলের ভিডিও মনে হবে। একটি ক্লিপ থেকে অন্য ক্লিপ এ যাওয়ার সময় যেন আপনার
দর্শক মনোযোগ না হারায় বা দেখার আগ্রহ না হারাই সেই জন্য এই ট্রানজিশন ব্যবহার
করতে হবে। এই ট্রানজিশন আপনাকে দুটি ক্লিপের মাঝে ব্যবহার করতে হবে।
উপরে উল্লিখিত অ্যাপগুলোতে অনেক ধরনের ট্রানজিশন রয়েছে তার মধ্যে এই যেগুলো
Dissolve, Fade বা Light Flash আছে সেগুলো ব্যবহার করলেই ভালো হয়। তবে মনে
রাখবেন, ভিডিও বেশি সুন্দর করার জন্য ইচ্ছামতো অনেকগুলো ট্রানজিশন ব্যবহার
করবেন না। এতে করে ভিডিওর সৌন্দর্য হারিয়ে যায় এবং দেখতে নন-প্রফেশনাল লাগে। এই
জন্য আপনার ভিডিওর জন্য যতটুকু দরকার বা প্রযোজ্য ততটুকুই ট্রানজিশন ব্যবহার
করবেন। তাহলে দেখবেন ভালো ফলাফল পাবেন।
অডিও এডিটিং করুন খুব সহজেই
অডিও এডিটিং ভিডিওকে আরো আকর্ষনীয় করে তোলে। আপনি আপনার ভিডিওর সাথে যদি ভালো
মানের অডিও মিউজিক দিতে পারেন তাহলে মানুষ আপনার ভিডিও দেখার আগ্রহ দেখাবে।
আমরা অনেক সময় মুভি গুলোতে দেখি যে কথার সাথে সাথে কিছু ব্যাকগ্রাউন্ড সাউন্ড
শোনা যায় যেগুলো মুভিকে আরো আকর্ষনীয় করে তোলে। এই জন্য আপনাকে এই অডিও এডিটিং
ভালো ভাবে শিখতে হবে। আপনি যদি আপনার মোবাইলের মাধ্যমে এই অডিও এডিটিং শিখেন
তাহলে আপনি অনেক কম সময়ের মধ্যে ভালো অডিও এডিট করতে পারবেন।
সাউন্ড ও মিউজিক ভিডিওর কোয়ালিটি প্রায় ৫০% নির্ভর করে এই অডিওর উপর। আপনি
ইউটিউবের জন্য ভিডিও তৈরি করলে সেখানে অর্থাৎ ইউটিউবের লাইব্রেরিতে অনেকগুলো
অডিও মিউজিক পাবেন যেগুলো একদম কপিরাইট ফ্রি। অথবা আপনি চাইলেই আপনার ব্যবহৃত
ভিডিও এডিটিং অ্যাপ থেকেও অনেক সুন্দর সুন্দর মিউজিক যুক্ত করতে পারবেন একদম
ফ্রিতে। তবে মিউজিক ব্যবহারের সময় অবশ্যই মাথায় রাখবেন যেন ভিডিওর সাউন্ড থেকে
অডিওর সাউন্ড কম হয় বা হলে ভিডিওতে যে কথাগুলো বলা হয় সেগুলো শোনা যায় না। এই
সাউন্ড ১০% থেকে ২০% এর মধ্যে রাখা ভালো।
এছাড়াও আপনি যদি Capcut বা kinemaster অ্যাপ ব্যবহার করেন তাহলে আপনি নয়েজ
রিমুভাল নামে একটি অপশন পাবেন। সেটার মাধ্যমে আপনি অপ্রয়োজনীয় নয়েজগুলো বাদ
দিতে পারবেন। এবং সর্বশেষ যে সার্ভিসটি পাবেন সেটি হলো সাউন্ড ইফেক্ট। আমরা
অনেক ভিডিওতে দেখি যে হাসির দৃশ্য, ধাক্কা বা কোনো গুরুত্বপূর্ণ টেক্সট আসার
সময় কিছু সাউন্ড হয় যেগুলো শুনতে ভালো লাগে। এগুলো দর্শকদের মনোযোগ ধরে রাখে।
আপনি চাইলে আপনার ভিডিওতে এই ধরনের অনেক সাউন্ড ইফেক্ট খুব সহজেই ব্যবহার করতে
পারবেন।
টেক্সট ও টাইটেল অ্যানিমেশন ও সাবটাইটেল
আমরা অন্যের ভিডিওগুলো দেখলে দেখতে পায় যে শুরুতেই কিছু টেক্সট আকারে আসে।
সেগুলো একেকটি লিখা একেকভাবে আসতে থাকে। এগুলোকে বলে টেক্সট ও টাইটেল
অ্যানিমেশন। এটার সাহায্যে আপনি কোন লিখা কিভাবে দেখাবে, কেমন দেখাবে, কোন দিক
দিয়ে ইন হবে এবং কোন দিক দিয়ে আউট হবে সেগুলো ঠিক করতে পারবেন। আপনার ভিডিওতে
এই ধরনের টেক্সট ও টাইটেল অ্যানিমেশন যুক্ত করতে চায়লে আপনাকে আপনার চ্যানেলের
সাথে মিলিয়ে আকর্ষণীয় ফন্ট নির্বাচন করবেন এবং খেয়াল রাখবেন টেক্সট যেন হঠাৎ
করে চলে না আসে তার জন্য ইন এবং আউট অ্যানিমেশন যোগ করতে হবে। তাহলেই দেখবেন
আপনার ভিডিওর কোয়ালিটি আরো ভালো হবে।
আর একটা কথা আমাদের মনে রাখতে হবে সেটা হলো আমাদের ভিডিওতে সাবটাইটেল যুক্ত
করা। এই সাবটাইটেল আমরা যদি আমাদের ভিডিওতে ব্যবহার করি তাহলে এটি সহজে
দর্শকদের কাছে পৌছাবে। এটি অন পেজ এসইওর জন্য ভালো কাজ করে। আপনি যদি Capcut
অ্যাপ ব্যবহার করেন তাহলে আপনি সেখানে অটো ক্যাপশন নামে এই ফিচারটি পেয়ে যাবেন।
এখান থেকে আপনি আপনার ভিডিওর জন্য অটো ক্যাপশন জেনারেট করে ব্যবহার করতে
পারবেন।
কালার কারেকশন (Color Correction) করার উপায়
আপনার ভিডিওকে আপনি যদি আরো প্রফেশনাল করতে চান, ভিডিওর সৌন্দর্য বৃদ্ধি করতে
চান তাহলে আপনাকে অবশ্যই এই কালার কারেকশন জানতে ও বুঝতে হবে। এই কালার
কারেকশনের মধ্যে রয়েছে ব্রাইটনেস ও কন্ট্রাস্ট। এর কাজ হলো আপনার ভিডিও যদি
অন্ধকার থাকে তাহলে আপনি এর সাহায্যে আলো বাড়াতে পারবেন। রংগুলোকে আরো উজ্জ্বল
করতে পারবেন। আরেকটি অপশন রয়েছে সেটি হলো স্যাচুরেশন। এটির মাধ্যমে আপনি আপনার
ভিডিওতে রঙের গভীরতা বাড়াতে পারবেন। এতে করে আপনার ভিডিও আরো প্রফেশনাল মানের
হয়ে উঠবে।
এছাড়াও সর্বশেষ যে অপশন রয়েছে সেটি হলো ফিল্টার। এটি আপনি আপনার ব্যবহার করা
অ্যাপের মধ্যেই পাবেন। সেটি ব্যবহার করে আপনি আপনার ভিডিওতে একটি নির্দিষ্ট মুড
বা থিম তৈরি করতে পারবেন। কালার কারেকশনের এই কয়েকটি অপশন সম্পর্কে আপনি যদি
ভালো ভাবে জানতে পারেন এবং দক্ষতা অর্জন করতে পারেন তাহলে আপনার ভিডিও অন্যদের
তুলনায় অনেক ভালো হবে এবং আপনি আপনার ইউটিউব চ্যানেলে ভালো ট্রাফিক আনতে
পারবেন।
অ্যাডভান্সড মোবাইল এডিটিং টেকনিক
আপনি যদি বেসিক থেকে শুরু করেন থাহলে আপনার জন্য অ্যাডভান্সড অপশন গুলোও অনেক
সহজ মনে হবে। আপনি খুব কম সময়ে অনেক ভালো ভিডিও এডিটিং করতে পারবেন। এই
অ্যাডভান্স মোবাইল এডিটিং আপনার জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। তবে সবার আগে আপনাকে
বেসিক ভিডিও এডিটিং থেকে শুরু করতে হবে। যখন আপনি বেসিক নিয়মগুলো মেনে ভিডিও
এডিট করতে পারবেন তখন আপনি খুব অল্প সময়ের মধ্যেই অ্যাডভান্সড নিয়মগুলোও আয়ত্বে
আনতে পারবেন।
একবার যদি আপনি অ্যাডভান্স নিয়ম গুলো আয়ত্ব করতে পারেন তাহলে দেখবেন আপনি খুব
সহজেই কম সময়ের ভেতরে প্রফেশনালদের মতো ভিডিও এডিটিং করতে পারবেন। এই
অ্যাডভান্সের মধ্যে রয়েছে গ্রিন স্ক্রিন এর ব্যবহার, পিকচার ইন পিকচার, কি
ফ্রেম এনিম্যাশন ইত্যাদি। এই দুটো অপশনের ব্যবহার আমরা পরের ধাপে জানব।
আরো পড়ুনঃ অনলাইনে সবচেয়ে লাভজনক ১৫টি ব্যবসা দেখুন
গ্রিন স্ক্রিন ব্যবহারঃ এটি এমন একটি অপশন যার মাধ্যমে আপনার অনেক কষ্ট লাঘব
হয়ে যাবে। শুধু আপনাকে সবুজ বা নীল পর্দার মধ্যে ভিডিও ধারণ করতে হবে এবং ভিডিও
এডিটিং এর সময় ক্রোমা কি বা রিমুভ ব্যাকগ্রাউন্ড অপশনটি চালু করে সেই সবুজ বা
নীল রঙটি রিমুভ করে আপনার পছন্দমতো যেকোনো একটা ব্যকগ্রাউন্ড যোগ করতে পারবেন।
এই অপশনটি আপনি kinemaster এবং capcut দুই অ্যাপের মধ্যেই পাবেন।
পিকচার-ইন-পিকচারঃ স্ক্রিন রেকর্ডিং বা রিঅ্যাকশন ভিডিওর জন্য এটি খুব জরুরি।
আপনার প্রধান ভিডিওর ওপর ছোট আরেকটি ভিডিও ক্লিপ যুক্ত করা। KineMaster-এ
'Layer' ফিচার এবং CapCut-এ 'Overlay' ফিচার ব্যবহার করে দ্বিতীয় ক্লিপটি যোগ
করুন এবং প্রয়োজন অনুসারে আকারে পরিবর্তন করুন।
কিফ্রেম অ্যানিমেশনঃ এটি ব্যবহার করে আপনি ভিডিওর মধ্যে টেক্সট, ছবি বা কোন
অবজেক্টকে ঘুরানো, আকার পরিবর্তন করা অথবা এক স্থানের থেকে অন্য স্থানে যেতে
অ্যানিমেট করতে পারেন।অবজেক্টে একটি কিফ্রেম (ছোট ডায়মন্ডের মতো চিহ্ন) যোগ
করুন। এরপর টাইমলাইনটি সামান্য এগিয়ে অবজেক্টের স্থান পরিবর্তন করুন। অ্যাপটি
স্বয়ংক্রিয়ভাবে প্রথম ফ্রেম থেকে দ্বিতীয় ফ্রেম পর্যন্ত গতি তৈরি করে দেবে।
ফ্রিতে শেখার সেরা উপায় এবং রিসোর্স
আপনি যেহেতু মোবাইল দিয়ে ঘরে বসে ইউটিউব ভিডিও এডিটিং শিখুন ফ্রিতে টপিকটি
খুঁজছেন, তাই আপনার জন্য সেরা রিসোর্স হলো ইউটিউব নিজেই!
ইউটিউবে সার্চ করুন:
"CapCut Full Course Bangla"
"Kinemaster A to Z Tutorial"
"মোবাইল ভিডিও এডিটিং ফুল টিউটোরিয়াল"
ভিডিও দেখে প্রাকটিস করা অনেক গুরুত্বপূর্ণ, শুধুমাত্র ভিডিও দেখলেই হবে না,
প্রতিটি টিউটোরিয়াল শেষে আপনার নিজের ধারণকৃত ক্লিপগুলো দিয়ে প্র্যাকটিস
করুন। এটি বিনামূল্যে দক্ষতা অর্জনের মূল চাবিকাঠি।
শেষ কথাঃ মোবাইল দিয়ে ঘরে বসে ইউটিউব ভিডিও এডিটিং শিখুন ফ্রিতে
মোবাইল দিয়ে ঘরে বসে ইউটিউব ভিডিও এডিটিং শিখুন ফ্রিতে এই আর্টিকেলটি অনেক
ধৈর্য ধরে পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই। এই ভিডিও এডিটিং শেখা একটি
চলমান প্রক্রিয়া। আজকের এই গাইডলাইন আপনাকে মোবাইল দিয়ে ঘরে বসে ইউটিউব ভিডিও
এডিটিং শিখুন ফ্রিতে, এই যাত্রার একটি মজবুত ভিত্তি এনে দিয়েছে। মনে রাখবেন,
সবচেয়ে দামি সফটওয়্যার নয়, বরং আপনার সৃজনশীলতা, গল্প বলার ক্ষমতা এবং
নিয়মিত অনুশীলনই আপনার ভিডিওকে লাখো মানুষের কাছে পৌঁছে দেবে। আর দেরি কেন?
আজই আপনার পছন্দের ফ্রি অ্যাপটি ডাউনলোড করুন এবং আপনার প্রথম ভিডিও এডিট করা
শুরু করুন!
আমাদের এই আর্টিকেল অনেক ধৈর্যসহকারে পড়ার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা
জানাই। আমাদের এই ওয়েবসাইট তথ্য ও প্রযুক্তি, ব্যবসা, অনলাইন ইনকাম, শিক্ষা ও
স্বাস্থ্য, ইসলামিক শিক্ষা ইত্যাদি বিষয় নিয়ে নিয়মিত আর্টিকেল প্রকাশ করে থাকি।
তাই নিত্য নতুন আপডেট তথ্য পেতে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি ফলো করে আমাদের পাশেই
থাকুন। ধন্যবাদ।
পি এম ড্রিম আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url