গর্ভাবস্থায় বরই খাওয়ার উপকারিতা
আসসালামু আলাইকুম/আদাব, আজকের বিষয়বস্তু হচ্ছে গর্ভাবস্থায় বরই খাওয়ার
উপকারিতা।গর্ভাবস্থায় বরই ফল খাওয়ার উপকারিতা নির্দিষ্টভাবে
গুরুত্বপূর্ণ।আমাদের দেশে বরই ফলের ঋতু শুরু হয় শীতের শেষভাগে।
আসুন, আজ আমরা এ
মৌসুমী বরই ফলের সুবিধাগুলি সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জানার চেষ্টা করি।আপনাদের
সুবিধার্থে পুরো প্রতিবেদন জুড়ে আজ আমরা বিস্তারিতভাবে আলোচনা করব বরই খাওয়ার
উপকারিতা এবং গর্ভাবস্থায় বরই খাওয়ার বিষয়ে কি জেনে নেওয়া দরকার ইত্যাদি
বিষয়গুলো।
পোস্ট সূচিপত্রঃ গর্ভাবস্থায় বরই খাওয়ার উপকারিতা
গর্ভাবস্থায় বরই খাওয়ার উপকারিতা
গর্ভাবস্থায় বরই খাওয়ার উপকারিতা এক কথায় অপরিসীম। গর্ভাবস্থার সময় পুষ্টিকর ফল খাওয়া অত্যন্ত জরুরি। এই ফলটি গ্রহণের ফলে একজন মায়ের এবং নবজাতকের জন্য অনেক ধরনের উপকারিতা বিদ্যমান থাকে। চলুন সেই উপকারিতাগুলি জানার চেষ্টা করি। অনেকে গর্ভাবস্থায় অধিক মোটা হয়ে যান। এতে করে বাড়ির কাজ করতে অনেক সমস্যার সন্মুখীন হতে হয়। আপনার শরীরের এই অতিরিক্ত চর্বি কমাতে বরই সাহায্য করে। বরই খেলে শুধু মায়ের নয় গর্ভের শিশুর জন্যও অনেক উপকারী। কারণ গর্ভাবস্থায় মায়ের খাবারের সব উপাদান থেকেই শিশুটি পুষ্টি গ্রহণ করে।
আরো পড়ুনঃ মরিঙ্গা পাউডার খাওয়ার সঠিক নিয়ম
বরইয়ের মধ্যে রয়েছে আয়রন, প্রোটিন, ক্যালসিয়াম গর্ভবতী নারীর স্বাস্থ্যের
উন্নতির জন্য বিশেষভাবে প্রয়োজনীয়। গর্ভবস্থায় বিভিন্ন শারীরিক পরিবর্তনের
কারণে পেটে ব্যাথা হতে পারে এবং বরই সেই ব্যথা কমাতে সাহায্য করে। আবার গর্ভবতী
মায়ের একটা কমন সমস্যা থাকে সেটা হলো বমি করা। আর বমি হলে গর্ভবতী মা একটু
অস্বস্তি মনে করে। এই অস্বস্তি দূর করতে বরই খেতে পারেন। আর সব থেকে বড় কথা হলো
একজন গর্ভবতী মায়ের শরীরে রক্ত সঞ্চালন এবং রক্তের সঠিক প্রবাহ বজায় রাখা খুবই
জরুরী।
এই জন্য বরই কার্যকরী ভূমিকা পালন করে এবং বরইয়ের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট গর্ভবতী
নারীদের শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরিতে সহায়তা করে। কার্ডিওভাসকুলার স্বাস্থ্যকে সচল
রাখতে এবং সঠিক করে রাখতে বড় ভূমিকা পালন করে। এছাড়াও বরইয়ের
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শারীরিক স্বাস্থ্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। বরই ভ্রুনের
স্নায়ুতন্ত্রের বৃদ্ধি এবং মস্তিষ্কের বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ সহায়তা প্রদান করে।
অন্যদিকে, গর্ভবতী মায়েদের পেশী এবং বিভিন্ন জয়েন্টে ব্যথা হতে পারে। বরই
খাওয়ার ফলে এর অ্যান্টি ইনফ্লেমেটরি উপাদান এসব ব্যথা প্রতিরোধ করতে সহায়তা
করে।
বরইয়ের উপকারিতা ও অপকারিতা কি কি
বরইয়ের ভিন্ন ভিন্ন উপকারিতা রয়েছে। কিন্তু এর ভালো দিকগুলো খারাপ দিকগুলোর তুলনায় অনেক বেশি। আসুন, সেগুলো সম্পর্কে বিশদ জানি। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি: ভিটামিন সি সমৃদ্ধ বরই আমাদের শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে, যা গর্ভাবস্থায় মায়েদের জন্য অত্যন্ত জরুরি।বরই খেলে আপনার শরীরে যে সমস্ত উপকার হবে তা নিচে দেওয়া হলো-
আরো পড়ুনঃ চুলের যত্নে কারি পাতার ব্যবহার
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট: বরইতে উপস্থিত অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উল্লেখযোগ্যভাবে শরীরের
কোষকে রক্ষা করে এবং সামগ্রিক স্বাস্থ্যের উন্নতিতে কাজে আসে।
রক্ত বিশুদ্ধ করণ: শুকনো বরইতে অনেক উপকারী উপাদান যেমন অ্যালকালয়েড, সাপোনিন, এবং ট্রাইটারপেনয়েড পাওয়া যায়। এগুলো রক্তকে বিশুদ্ধ এবং হজম প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করে।
ওজন নিয়ন্ত্রণ: বরইয়ের আরেকটি উল্লেখযোগ্য সুবিধা হলো এতে কোন ফ্যাট নেই। একাধিক বড়ই খেলে আপনি ৪৪ ক্যালোরি শক্তি পাবেন। তাই ওজন নিয়ন্ত্রণের জন্য বরই ফল অনেক উপকারী। এ কারণে পুষ্টিবিদরা ওজন কমানোর জন্য বরই খাওয়ার সুপারিশ করেন।
ক্যান্সার প্রতিরোধ: বরই খাওয়ার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সুবিধা হলো ক্যান্সার প্রতিরোধ। বরইতে প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে, যা শরীরে টিউমার তৈরি হবার ঝুঁকি কমিয়ে দেয়। এর ফলে ক্যান্সারের জীবাণুর বাসস্থান তৈরির সুযোগ থাকে না।
নিদ্রাহীনতা দূরকরণেঃ বড়ই খাওয়া ফলে শান্তিদায়ক ঘুম হয়। এই ফলে থাকা কার্যকরী কেমিক্যালগুলি আমাদের মস্তিষ্ককে শিথিল করে। এর ফলে আমাদের ঘুম হবে খুব গভীর ও স্বাচ্ছন্দ্যময়। যারা ঘুমের সমস্যায় ভুগছেন, তারা বড়ই খেতে পারেন। এটি নিদ্রাহীনতা নিরসনে সাহায্য করে।
রক্ত বিশুদ্ধ করণ: শুকনো বরইতে অনেক উপকারী উপাদান যেমন অ্যালকালয়েড, সাপোনিন, এবং ট্রাইটারপেনয়েড পাওয়া যায়। এগুলো রক্তকে বিশুদ্ধ এবং হজম প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করে।
ওজন নিয়ন্ত্রণ: বরইয়ের আরেকটি উল্লেখযোগ্য সুবিধা হলো এতে কোন ফ্যাট নেই। একাধিক বড়ই খেলে আপনি ৪৪ ক্যালোরি শক্তি পাবেন। তাই ওজন নিয়ন্ত্রণের জন্য বরই ফল অনেক উপকারী। এ কারণে পুষ্টিবিদরা ওজন কমানোর জন্য বরই খাওয়ার সুপারিশ করেন।
ক্যান্সার প্রতিরোধ: বরই খাওয়ার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সুবিধা হলো ক্যান্সার প্রতিরোধ। বরইতে প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে, যা শরীরে টিউমার তৈরি হবার ঝুঁকি কমিয়ে দেয়। এর ফলে ক্যান্সারের জীবাণুর বাসস্থান তৈরির সুযোগ থাকে না।
নিদ্রাহীনতা দূরকরণেঃ বড়ই খাওয়া ফলে শান্তিদায়ক ঘুম হয়। এই ফলে থাকা কার্যকরী কেমিক্যালগুলি আমাদের মস্তিষ্ককে শিথিল করে। এর ফলে আমাদের ঘুম হবে খুব গভীর ও স্বাচ্ছন্দ্যময়। যারা ঘুমের সমস্যায় ভুগছেন, তারা বড়ই খেতে পারেন। এটি নিদ্রাহীনতা নিরসনে সাহায্য করে।
এছাড়াও বরই পাতা বিভিন্ন ধরনের সুফল প্রদান করে। এই পাতা আমাদের শরীরের একাধিক
অসুখের চিকিৎসায় কাজে আসে। যাদের ডায়াবেটিসজনিত সমস্যা বিদ্যমান, তারা যদি
নিয়মিতভাবে বরই পাতার রস পান করেন, তবে তারা উল্লেখযোগ্যভাবে লাভবান হতে পারেন।
আবার যাদের কিডনি সংক্রান্ত ঝামেলা রয়েছে, তারা যদি বরই পাতা থেকে রস তৈরি করে
খান, তাহলে তাদের সমস্যা সমাধানে সহায়তা হতে পারে। বরই পাতার রস গ্রহণ করলে
শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বাড়বে।
বরইয়ের অপকারিতা গুলো
অতিরিক্ত বড়ই খেলে কিছু ক্ষতিকর প্রভাব থাকতে পারে। যদি আপনি এর অতি পরিমাণ খান, তাহলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা বা ডায়রিয়া হতে পারে। কারণ এতে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার রয়েছে। যাঁরা ডায়াবেটিসে ভুগছেন, তাদের বরই খাওয়ার আগে সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত। এটি প্রাকৃতিকভাবে চিনিযুক্ত, ফলে রক্তে চিনির মাত্রা বাড়িয়ে দিতে পারে, যা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। বড়ই মিষ্টি জাতের ফলে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ঝুঁকি উপস্থিত থাকতে পারে, এজন্য তাদের জন্য এটি পরিহার করা উচিত।বরইয়ে যে ভিটামিন বিদ্যমান ও বরই খাওয়ার উপায়
বরই একটি অত্যন্ত পুষ্টিকর ফল। এই ফল গাছ আমরা আমাদের বাড়ির আশে পাশে দেখতে পায়। যদিও শহরে এই গাছ এখন খুব একটা দেখা যায় না। এই ফলে ৩৪.৫ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি রয়েছে। এই উপাদান শরীরের বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধে সহায়ক ভূমিকা রাখে। বরইয়ে ২০ আইইউ ভিটামিন এ পাওয়া যায়, যা চোখের এবং ত্বকের স্বাস্থ্য উন্নত করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। বরইয়ে ৩০.৪০৫ মিলিগ্রাম ভিটামিন বি রয়েছে, যা স্নায়ুতন্ত্রের সুস্থতার জন্য প্রয়োজনীয়।
বরই খাওয়ার উপায় বলতে আমরা সাধারণত দুই ভাবে বরই খেতে পারি। তবে বেশির ভাগ মানুষ
বরই হালকা লবণ দিয়ে খেতে বেশি ভালোবাসে। আবার বরই যদি মিষ্টি হয় তাহলে এমনিতেই
খাওয়া যায়। আবার আমরা অনেক সময় দেখি যে বরই মরিচ, লবণ দিয়ে মাখিয়ে খায়। এভাবে
খেলেও অনেক টেষ্টি হয়। তবে আপনি যেমন ভাবেন খান না কেন। আপনাকে খেয়াল রাখতে হবে
যে বরই এর মধ্যে যেন কোনো প্রকার পোকা না থাকে বা পচা না হয়। কারণ নষ্ট বরই খেলে
অনেক সময় আমাদের পেটে অনেক ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। বিশেষ ভাবে যারা গর্ভবতী রয়েছে
তাদের জন্য এটি অনেক ক্ষতিকর। তাই খাবার পূর্বে ভালোভাবে পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে
খাবেন।
বরই খেলে কি ডায়াবেটিস বৃদ্ধি পায়
বড়ই একটি টক ফল। এই ফল প্রাকৃতিকভাবে আখের চিনিতে বিদ্যমান থাকে। তাই এই ফলের ব্যবহারে রক্তের শর্করার স্তর বৃদ্ধি হতে পারে। ডায়াবেটিস আক্রান্ত ব্যক্তিদের এটি খাওয়ার আগে সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত এবং অবশ্যই পরিমিত পরিমাণে গ্রহণ করতে হবে। অতিরিক্ত বরই খেলে ডায়রিয়ার বা অস্বস্তির সৃষ্টি হতে পারে। যে কোনো পরিস্থিতিতে, গর্ভাবস্থায় বরই খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে উপরের আলোচনার মাধ্যমে জানা যেতে পারে।বরই বেশি খেলে কি সমস্যা হয়
ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে শর্করা বেশি থাকায় সীমিত পরিমাণে বরই খাওয়া উচিত। অতিরিক্ত বরই খেলে হজমে সমস্যা, পেট ফাঁপা, যন্ত্রণা, এবং ডায়রিয়ার মতো সমস্যা হতে পারে। অধিক বরই খাওয়ার কারণে দাঁতে সমস্যা, দাঁতের ক্ষয় বা ক্যাভিটির সম্ভাবনা থাকে। কিছু লোক বরই খাওয়ার ফলে চর্মরোগ বা চুলকানি অনুভব করতে পারে। ব্যথানাশক ঔষধ গ্রহণকালে বরই খাওয়া এড়ানো উচিত, কারণ এটি ঔষধের কার্যকারিতার সাথে বিরোধিতা করে। শ্বাসকষ্টের সমস্যার সম্মুখীন ব্যক্তিরা কাঁচা বরই বেশি খেলে সমস্যা বৃদ্ধি পেতে পারে। বরইয়ের গ্রহণ পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করা গুরুত্বপূর্ণ, এবং যদি কোন সমস্যা দেখা দেয় তবে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন।বরই খাওয়ার জন্য কিছু সতর্কতা
সব খাবারেই যেমন পুষ্টি উপাদান থাকে তেমনি কিছু সমসসাও থাকে। আমাদের যে কোনো ফল খাওয়ার আগে তার গুনাগুণ সম্পর্কে জানা প্রয়োজন। আমাদের শরীরে সকল ধরনেরই পুষ্টি উপাদান দরকার হয় কিন্তু তা পরিমিত পরিমাণে। অতিরিক্ত সব কিছুই খারাপ। তাই আমাদের যতটুকু প্রয়োজন ততটুকুই খাওয়া দরকার। নিয়মিত সঠিক পরিমাণে বরই খেলে গর্ভাবস্থায় ভালো ফল পাওয়া যায়। খাওয়ার আগে বরইকে ভালো করে ধোয়া উচিত।শেষ কথাঃ গর্ভাবস্থায় বরই খাওয়ার উপকারিতা
গর্ভাবস্থায় বরই খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে যদি আপনর মনোযোগ দিয়ে পড়ে থাকেন তবে নিশ্চয়ই গর্ভাবস্থায় বরই খাওয়ার সুফল সম্পর্কে একটি স্পষ্ট ধারণা পেয়েছেন। আমরা বরইয়ের উপকারিতা এবং ক্ষতিকারক দিকও জানতে পারলাম। তাই একটি স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন করার জন্য মৌসুমী বরই ফলটি নিশ্চিন্তে গ্রহণ করতে পারেন। বরই খাওয়ার সুফল, বরইয়ের পুষ্টিগুণ এবং গর্ভাবস্থায় বরই খাওয়ার বিষয় সম্পর্কে অন্যদের জানানোর জন্য পোস্টটি শেয়ার করতে পারেন।
আরো পড়ুনঃ বরই পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা
এরকম আরো নতুন নতুন তথ্য পেতে আমাদের ওয়েবসাইট নিয়মিত পরিদর্শন করুন। আমরা
আমাদের এই ওয়েবসাইটে তথ্য প্রযুক্তি, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য, ব্যবসা, অনলাইন ইনকাম,
জমি জমা ইত্যাদি বিষয়ে নিয়মিত আর্টিকেল শেয়ার করে থাকি। আপনার যদি আমাদের এই
ওয়েবসাইটের আর্টিকেল গুলো ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই আমাদের এই পিএমড্রিম আইটি
ওয়েবসাইটটি ফলো করে আমাদের সাথেই থাকুন। আসসালামু আলাইকুম/আদাব।
পি এম ড্রিম আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url