চুলের যত্নে কারি পাতার ব্যবহার
আপনার কি প্রতিনিয়ত চুল পড়ে যাচ্ছে? আপনার চুলে কি অনেক খুশকি আছে? আপনার চুলের
আগা কি ফেটে যাচ্ছে? আপনার চুলের গোড়া কি দূর্বল হয়ে যাচ্ছে? আপনার কি অল্প বয়সেই
চুল পেকে যাচ্ছে? তাহলে আর দেরি না করে আমাদের এই পোস্টটি মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।
আমাদের এই পোস্টে আপনি আপনার চুলের সমস্ত প্রকারের সমস্যার সমাধান পেয়ে যাবেন।
সেই সাথে আপনি আপনার চুলকে কিভাবে যত্ন করবেন সেই গাইডলাইনও পেয়ে যাবেন। তাই দেরি
না করে চলুন আলোচনাটা শুরু করা যাক।
পোস্ট সূচিপত্রঃ চুলের যত্নে কারি পাতার ব্যবহার
- চুলের যত্নে কারি পাতার ব্যবহার
- কারিপাতার মধ্যে কি কি উপাদান আছে?
- কারিপাতা ব্যবহারে আপনি যে সমস্ত উপকার পাবেন
- কারিপাতা কি কি উপায়ে ব্যবহার করা যায়?
- হেয়ার মাস্ক যেভাবে ব্যবহার করবেন
- কারি পাতার তেল
- কারি পাতা রোদে শুকিয়ে
- কারি পাতা ও দুধ
- বিটের খোসা, কারিপাতা, আমলকী, আদা ও পানি
- কারি পাতার জল
- কারি পাতা ও জবা ফুল
- মেথি পাতা, কারিপাতা, আমলকী পাতা
- কারি পাতা ও এলোভেরা
- কারি পাতা এবং গ্লিসারিন
- কারি পাতা এবং ডিম
- কারি পাতা এবং মেহেদি
- কারি পাতা, তুলসি, নিম পাতা
- সরিষা, কালোজিরা, মেথি, পেঁয়াজ, পানি
- আপনার খাদ্য তালিকায় কারিপাতা যেভাবে যোগ করবেন
- কারি পাতা খাওয়ার ক্ষেত্রে সতর্কতা
- শেষ কথাঃ চুলের যত্নে কারি পাতার ব্যবহার
চুলের যত্নে কারি পাতার ব্যবহার
চুলের যত্নে কারি পাতার ব্যবহার কিভাবে করবেন এটা আমরা অনেকেই জানি না। আবার
চুলের জন্য কারি পাতা কেমন কাজ করে সেটিও জানি না। এই কারি পাতা চুলের জন্য অনেক
উপকারী একটি উপাদান। প্রাচীন কালে মানুষ তাদের যত্ন নিত এই কারি পাতা দিয়ে। এটি
একটি প্রাকৃতিক উপাদান যার মধ্যে কোনো ভেজাল নেই।
আরো পড়ুনঃ
বর্তমানে আধুনিক বিজ্ঞানীগণ এই পদ্ধতিকে বৈধতা প্রদান করছেন। এটি চাইলেই সকল
বয়সের মানুষ ব্যবহার করতে পারে। এটি কিভাবে ব্যবহার করবেন? কখন করবেন? এর সাথে
আরো কোনো উপাদান লাগবে কি না সব কিছু জানতে পারবেন আমাদের এই পোস্টে।
কারিপাতার মধ্যে কি কি উপাদান আছে?
কারিপাতার মধ্যে কি কি উপাদান আছে তা জানা খুবই জরুরী একটি বিষয়। কারণ আপনি যদি
না জানেন যে এই কারিপাতার মধ্যে কি কি আছে? এর কাজ কি কি? তাহলে আপনি এটি কেন
ব্যবহার করবেন তাই না। আমরা অনেক সময় কিছু না জেনে মানুষের কথাতেই অনেক জিনিস
ব্যবহার করি এবং শেষে কোনো ফলাফল পায় না। এই জন্য যেটি আপনি ব্যবহার করবেন সেটির
গুনাগুন সম্পর্কে জানবেন। বুঝবেন যে আপনার মধ্যে কোন কোন উপাদানের ঘাটতি আছে এবং
সেই ঘাটতি উপাদান সেই জিনিসের মধ্যে বিদ্যমান আছে কি না।
তাহলে দেখবেন আপনি যে কোনো কিছু ব্যবহার করে ভালো ফলাফল পাবেন। এই জন্য কোনো কিছু
ব্যবহার করার আগে আমাদের তা ভালো করে যাচাই বাছাই করা জ্রুরী। এই কারিপাতার মধ্যে
ভিটামিন এ, ভিটামিন বি, ভিটামিন সি এবং ভিটামিন ই আছে যা চুলের স্বাস্থ্য ভালো
রাখতে সাহায্য করে। আরো রয়েছে আয়রন, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস ও ম্যাগনেসিয়াম যা চুলের
আগা ও গোড়া মজবুত করতে সাহায্য করে। এছাড়াও রয়েছে বিটা ক্যারোটিন,
অ্যান্টিব্যাক্টেরিয়াল, অ্যামিনো এসিড, ক্যারোটিন, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, প্রোটিন
ইত্যাদি। এগুলো মধ্যে কোন উপাদানের কি কাজ তা আমরা ধাপে ধাপে আলোচনা করব। মনোযোগ
দিয়ে পোস্টটি পড়ুন তাহলেই আপনি বুঝতে পেরে যাবেন।
কারিপাতা ব্যবহারে আপনি যে সমস্ত উপকার পাবেন
কারিপাতা ব্যবহারে আপনি যে সমস্ত উপকার পাবেন তা নিম্নে আলোচনা করা হলো। এই
কারিপাতা যেহেতু একটি প্রাচীন চিকিৎসা এবং প্রাকৃতিক চিকিৎসা সেহেতু এটির মধ্যে
কোনো ভেজাল নেই। এটি সম্পূর্ণ নির্ভেজাল একটি আয়ুর্বেদিক যা আপনার চুলকে রাখবে
অনেক সুন্দর ও ঝলমলে। এই কারি পাতা নিয়মিত ব্যবহারের ফলে যে সমস্ত উপকারে পাবেন
তা হলো-
চুল পড়া কমায়ঃ আমরা অনেক সময় খেয়াল করলে দেখি আমাদের বা আমাদের পরিবারের কারো না
কারো প্রতিনিয়ত চুল পড়ে। এটি সাধারণত একটি কমন সমস্যা। আমরা অনেকেই অনেক প্রশাধনী
ব্যবহার করে ফেলেছি কিন্তু কোনো ফলাফল পায়নি। তাই আপনি যদি এই কারিপাতা ব্যবহার
করেন তাহলে আপনার চুল পড়া অনেকাংশেই বন্ধ হয়ে যাবে। কারণ এই কারিপাতার মধ্যে
রয়েছে বিটা ক্যারোটিন এবং প্রোটিন যা চুল পড়া কমাতে সাহায্য করে।
মাথার পরিবেশ ভালো রাখেঃ আমরা অনেক সময় খেয়াল করি আমাদের মাথায় অনেক খুশকি হয় এবং
অনেক চুলকাতে থাকে। এই কারিপাতায় রয়েছে অ্যান্টিফাঙ্গাল, অ্যান্টিব্যাক্টেরিয়াল
যা আপনার মাথার ত্বককে আরো স্বাস্থ্যকর করে তোলে। সেই সাথে আমাদের মাথায় যে মৃত
কোষগুলো থাকে সেগুলো সরিয়ে ফেলে এবং সেই লোমকুপগুলো বন্ধ করে দেয়। এর ফলে মাথা
পরিষ্কার থাকে এবং ঠান্ডা থাকে।
চুল ঘন করেঃ আমাদের অনেকেরই চুল পড়ে পড়ে মাথা ফাঁকা হয়ে যায়। কিন্তু কোনো উপায়
খুঁজে পায় না যে কিভাবে চুল আরো ঘনো করা যায়। তাদের জন্য এই কারিপাতা হচ্ছে বেস্ট
একটা ঔষুধ। এই কারিপাতার মধ্যে রয়েছে অ্যামিনো এসিড এবং প্রচুর পরিমাণে ক্যারোটিন
যা চুল ঘন করতে অনেক সাহায্য করে।
চুল কালো করেঃ আমরা অনেকেই আছি যাদের বয়স না হতেই চুলে পাক ধরা শুরু করে। যার
কারণে চুল সাদা কালো হয়ে যায় এবং দেখতে ভালো লাগে না। তখন নিজেদের মধ্যে অনেক
খারাপ লাগে, বাইরে যেতে ইচ্ছে করে না। তাদের জন্য এই কারিপাতা ব্যবহার করা উত্তম।
এই কারিপাতার মধ্যে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ভিটামিন বি যা চুল কালো করতে
সাহায্য করে।
চুলের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি ও চুলের ভাঙ্গা রোধ করেঃ অনেকের চুল থাকে অনেক শুষ্ক ও
রুক্ষ। দেখতে অনেকটা অমসৃণ এর মতো লাগে। তাদের চুলের এই সমস্যা দূর করতে
কারিপাতার জুড়ি নেই। এই কারিপাতার তেল নিয়ম করে চুলে মাখলে কিছুদিনের মধ্যেই
চুলের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পায় ও মসৃণ হয়। আবার অনেকের চুল ফেটে যায় বা ভেঙ্গে যায়।
তাদের এই সকল সমস্যা দূর হবে এই কারিপাতা ব্যবহারের মাধ্যমে। কারণ এই কারিপাতায়
রয়েছে প্রোটিন ও বিটা ক্যারোটিন। যা চুলের ভাঙ্গা রোধ করে।
পিএইচ ভারসাম্য রক্ষা করেঃ অনেক সময় আমাদের মাথার ত্বকের ভারসাম্য ঠিক থাকে না।
যার ফলে চুল পড়া, খুশকি ও মাথায় ছত্রাকের মতো দেখায়। এই সমস্যা সমাধানের জন্য
আপনাকে নিয়মিত কারিপাতা ব্যবহার করতে হবে। তাহলে আপনার মাথার ত্বকের পিএইচ
ভারসাম্য রক্ষা হয় এবং সঠিক থাকে। এছাড়াও চুলের জট থাকলে সেটা থেকে মুক্ত পাওয়া
যায়। এই কারিপাতায় রয়েছে অ্যান্টিফাঙ্গাল যা ত্বকের যে খুশকি থাকে সি খুশকির
ছাত্রাকের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায়।
মাথার ত্বকের জালাপোড়া কমায়ঃ আমাদের অনেকের মাথার ত্বকে অনেক সময় অনেক চুলকায়,
জ্বালাপোড়া করে, মাথার ত্বক লাল হয়ে যায়। এই সমস্ত সমস্যা সমাধানে এই কারিপাতা
অনেক কার্যকর একটি উপাদান হিসেবে কাজ করে। এই কারিপাতায় রয়েছে অ্যান্টি
ইনফ্লেমেটরি যা মাথার ত্বকের এই ধরনের সমস্যা সমাধানে সহায়ক হিসেবে কাজ করে।
কারিপাতা কি কি উপায়ে ব্যবহার করা যায়?
কারিপাতা কি কি উপায়ে ব্যবহার করা যায় তা জানতে হবে। এতক্ষণ আমরা জানলাম যে
কারিপাতা ব্যবহার করলে আমাদের চুলে কি কি ধরনের সমস্যা দূর করা যাবে সেই
সম্পর্কে। এখন আমরা জানব যে এই কারি পাতা কি কি উপায়ে ব্যবহার করলে আমরা ভালো
ফলাফল পাব। এই কারিপাতা আমরা অনেক ভাবেই ব্যবহার করতে পারি। এই পোস্টটে আমরা বেশ
কিছু উপায় সম্পর্কে আলোচনা করব। আপনার যে উপায়টি ভালো লাগবে সেই উপায়টিই আপনি
আপনার কাজে লাগাতে পারেন। এখানে আমরা প্রায় ১৫টি উপায় সম্পর্কে আলোচনা করব।
সেগুলো হলো-
- হেয়ার মাস্ক
- কারি পাতার তেল
- কারি পাতা রোদে শুকিয়ে
- কারি পাতা আর দুধ
- বিটের খোসা, কারিপাতা, আমলকী, আদা ও পানি
- কারি পাতার জল
- কারি পাতা ও জবা ফুল
- মেথি পাতা, কারিপাতা, আমলকী পাতা
- কারি পাতা, এলোভেরা
- কারিপাতা, গ্লিসারিন
- কারিপাতা, ডিম
- কারিপাতা, মেহেদি
- কারিপাতা, তুলসি পাতা, নিমপাতা
হেয়ার মাস্ক যেভাবে ব্যবহার করবেন
হেয়ার মাস্ক তৈরি করে আপনি আপনার চুলে ব্যবহার করতে পারবেন। এটি তৈরির জন্য আপনার
দরকার হবে কারিপাতা, দই এবং কয়েক ফোটা নারিকেল তেল। প্রথমে আপনাকে কারিপাতা
পরিষ্কার পানিতে ধুয়ে নিতে হবে। তারপর ব্লেন্ডারে বা সিল পাটায় তা বেটে নিতে হবে।
বেটে নেওয়া হলে সেটির সাথে এক চা চামুচ দই ও কয়েক ফোঁটা নারিকেল তেল দিয়ে ভালো
করে মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করতে হবে।
পেস্ট তৈরি করা হলে আপনি সেটি আপনার চুলের আগা থেকে গোড়া পর্যন্ত ভালো ভাবে
লাগাবেন। লাগানো শেষ হলে আধা ঘন্টা রেখে দিন তারপর শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
তাহলেই দেখবেন আপনার চুল আরো মসৃণ ও উজ্জ্বল হবে। এই হেয়ার মাস্কটি আপনি সপ্তাহে
দুইবার ব্যবহার করতে পারেন। তাহলে কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই ভালো ফলাফল পাবেন।
কারি পাতার তেল
এই কারি পাতার তেল আপনি আপনার নিজের বাসায় বসে থেকেই খুব সহজেই তৈরি করতে পারেন।
এর জন্য আপনার দরকার হবে কয়েকটি কারিপাতা এবং একটু নারিকেল তেল। প্রথমে আপনাকে
পরিমাণ মতো নারিকেল তেল নিতে হবে। সেই পরিমাণ মতো তেলে কয়েকটি কারিপাতা দিয়ে
চুলাতে জ্বাল দিন। যখন দেখবেন যে কারিপাতা একটু কালচে বর্ণ ধারণ করছে
আরো পড়ুনঃ
তখন চুলা থেকে নামিয়ে ঠান্ডা করার জন্য রেখে দিন। ঠান্ডা হলে সেটি পরিষ্কার কাপড়
বা ছাঁকনি দিয়ে ভালো ভাবে ছেঁকে নিন। এবং একটি বোতলে সংরক্ষণ করুন। সেই তেল আপনি
নিয়মিত চুলে লাগিয়ে কয়েক ঘন্টা রেখে দিতে পারেন। বা চাইলে ঘুমানোর আগে রাত্রে
মেখে ঘুমান, সকালে উঠে শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
কারি পাতা রোদে শুকিয়ে
কারি পাতা রোদে শুকিয়েও ব্যবহার করা যায়। তবে এই কারি পাতা ভালোভাবে রোদে শুকানোর
পর তা ব্লেন্ডারে গুড়া করে সেটির সাথে ১ চা চামুচ দই মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে আপনার
চুলে লাগাতে পারেন। এটি ব্যবহারের ফলে আপনার চুল আগের তুলনায় অনেক বৃদ্ধি পাবে।
যাদের চুল বড় হয়না তাদের জন্য এই পদ্ধতিটি অনেক কার্যকরী। এটি আপনি কিছুদিন
ব্যবহার করলেই ভালো একটা ফলাফল পাবেন।
কারি পাতা ও দুধ
আপনি চাইলে কারিপাতা ও দুধ একত্রে মিশিয়ে ব্যবহার করতে পারেন। এর জন্য আপনাকে
পরিমাণমতো কারি পাতা পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে ব্লেন্ডারে ব্লেন্ড করে নিন। তারপর
সেটির সাথে পরিমাণ মতো দুধ দিয়ে ভালোভাবে মেশান। যখন দেখবেন যে সেটি পেস্ট এর
আকার ধারণ করেছে তখন সেটি আপনার চুলে লাগাতে পারেন। এটি লাগানোর পর ৩০ থেকে ৪৫
মিনিট রেখে তারপর শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এই পদ্ধতিটিও চুলের জন্য অনেক
কার্যকরী।
বিটের খোসা, কারিপাতা, আমলকী, আদা ও পানি
বিটের খোসা, কারিপাতা, আমলকী, আদা ও পানি দিয়েও আপনি ঘরে বসে খুব সহজে একটি হেয়ার
মাস্ক তৈরি করতে পারবেন। প্রথমে আপনাকে প্রত্যেকটা জিনিস পরিষ্কার পানিতে ধুয়ে
নিতে হবে। তারপর বিটের খোসা ছোট ছোট করে কেটে নিবেন। এরপর সব ব্লেন্ডারে দিয়ে
ভালো করে ব্লেন্ড করে নিবেন। তাহলে এটি পেস্ট আকার ধারণ করবে সেই পেস্ট ভালো করে
চুলের আগা থেকে গোড়া পর্যন্ত লাগাবেন তাহলে আপনার চুল আগের তুলনায় অনেক দ্রুত
লম্বা হবে।
কারি পাতার জল
কারি পাতার জল চুলের যত্ন নেওয়ার জন্য অনেক ভালো কাজ করে। এটি তৈরির জন্য আপনাকে
প্রথমে কারি পাতা পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে নিতে হবে। তারপর একটি পাত্রে এক কাপ
পানি আর এক মুঠ কারিপাতা নিয়ে চুলাতে একটু আচ দিতে হবে। কিছুক্ষণ পর দেখবেন যে
কারিপাতার রং একটু কালো আকার ধারণ করেছে। তখন পানি একটি পরিষ্কার কাপড়ের সাহায্যে
ছেঁকে নিতে হবে। সেই পানি ঠান্ডা হয়ে গেলে সেই পানি চুলে দিতে পারেন। তাহলে আপনার
চুল সুস্থ্য ও মজবুত থাকবে।
কারি পাতা ও জবা ফুল
কারি পাতা ও জবা ফুল দিয়েও আপনি একটি সুন্দর হেয়ার মাস্ক তৈরি করতে পারবেন। এটির
জন্য আপনাকে কারিপাতা ও জবা ফুল একসাথে ব্লেন্ডারে ব্লেন্ড করে নিতে হবে। তারপর
যে পেস্ট তৈরি হবে সেটি আপনি আপনার চুলে লাগাতে পারেন।
মেথি পাতা, কারিপাতা, আমলকী পাতা
মেথি পাতা, কারি পাতা, আমলকী পাতা এই তিন পাতা দিয়েও দারুণ একটি হেয়ার মাস্ক তৈরি
করা যায়। আপনাকে প্রথমে এই গুলো ভালো করে পরিষ্কার পানিতে ধূয়ে নিতে হবে। তারপর
ব্লেন্ডারে ব্লেন্ড করে নিতে হবে। তাহলে দেখবেন এটি পেস্ট আকার ধারণ করেছে। সেই
পেস্ট আপনি নিয়মিত আপনার চুলে লাগালে আপনার চুল আগের তুলনায় হয়ে উঠবে সিল্কি ও
উজ্জ্বল।
কারি পাতা ও এলোভেরা
কারি পাতা ও এলোভেরা ব্যবহার করেও আপনি একটি ভালো মানের হেয়ার মাস্ক তৈরি করতে
পারবেন। এখানে আপনাকে কারিপাতা ব্লেন্ড করার পর তার সাথে এলোভেরার ভেতরে যে জেল
থাকে সেই জেল কারি পাতার সাথে মিশিয়ে সেটি আপনি আপনার চুলে ভালো করে লাগাবেন যেন
আপনার চুল সেই পেস্টে একবারে ঢেকে যায়। এভাবে আপনি সপ্তাহে দুই দিন ব্যবহার করলেই
আপনি ভালো ফলাফল পাবেন।
কারি পাতা এবং গ্লিসারিন
কারি পাতা এবং গ্লিসারিন দিয়েও আপনি একটি স্প্রে করতে পারেন। এর জন্য আপনাকে কারি
পাতা পানিতে দিয়ে সেটি চুলাতে ফুটিয়ে নিবেন। তারপর সেই পানির সাথে একটু গ্লিসারিন
দিবেন। তারপর সেই পানি প্রতিদিন গোসলের পর চুলে হালকা করে স্প্রে করে দিবেন।
তাহলে দেখবেন আপনার চুল অনেক সতেজ থাকবে।
কারি পাতা এবং ডিম
কারি পাতা এবং ডিম ব্যবহার করেও সুন্দর হেয়ার মাস্ক তৈরি করা সম্ভব। এর জন্য
আপনাকে কারিপাতা ব্লেন্ডারে ব্লেন্ড করার পর কাঁচা ডিম মেশাতে হবে। ভালো করে
মেশানোর পর আপনি এটি আপনার চুলে ব্যবহার করবেন। তাহলে আপনার চুলের যে অমসৃণ ভাব
আছে সেটি চলে যাবে।
কারি পাতা এবং মেহেদি
কারি পাতা এবং মেহেদি দিয়ে আপনি ঘরে বসে আপনার অবসর সময়ে এটি তৈরি করতে পারবেন।
এটি তৈরির জন্য আপনাকে কারি পাতা ও মেহেদি ভালো করে পরিষ্কার পানিতে ধুয়ে নিতে
হবে। তারপর এটিকে ব্লেন্ডারে ব্লেন্ড করে নিবেন আর যদি আপনার বাসায় ব্লেন্ডার না
থাকে তাহলে আপনি চাইলে এটি আপনার বাসায় থাকা সিল পাটাতে বেটে নিতে পারেন। তারপর
দুটিকে একসাথে ভালো করে মিশিয়ে চুলে লাগাতে হবে। চাইলে আপনি এর সাথে একটু নারিকেল
তেল মেশাতে পারেন তাহলে এটি আপনার চুলে লাগাতে আরো সহজ হয়ে যাবে।
কারি পাতা, তুলসি, নিম পাতা
কারি পাতা, তলসি, নিম পাতা এই তিনটি উপাদান দিয়ে আপনি ভালো মানের একটি হেয়ার
মাস্ক তৈরি করতে পারবেন। এটি আপনি সম্পূর্ণ ঘরোয়া উপায়ে করতে পারবেন। এই তিনটি
উপাদান পরিষ্কার পানিতে ভালো করে ধুয়ে ব্লেন্ডারে ব্লেন্ড করবেন বা সিল পাটাতে
বেটে নিবেন। তাহলে এটি পেস্ট এর মতো হয়ে যাবে। এই পেস্ট আপনি সপ্তাহে দুইদিন
আপনার চুলে লাগাতে পারবেন।
সরিষা, কালোজিরা, মেথি, পেঁয়াজ ও পানি
সরিষা, কালোজিরা, মেথি, পেঁয়াজ ও পানির সংমিশ্রণে একটি সুন্দর হেয়ার স্প্রে তৈরি
করতে পারবেন আপনার ঘরে বসে। এটি করার জন্য আপনি একটি পাত্রে প্রথমে একটু সরিষা,
কালোজিরা, মেথি, পেঁয়াজ এবং পরিমাণ মতো পানি দিবেন। তারপর পাত্রটি চুলাতে দিয়ে
পাঁচ মিনিটের মতো জ্বাল দিন। পানিটি ফুটলে চুলার আচ বন্ধ করে দিবেন। তারপর সেই
পানিটি পরিষ্কার কাপড়ের সাহায্যে ভালো করে ছেঁকে নিবেন এবং একটি বোতলে সংরক্ষণ
করে রাখবেন। এই পানিটি আপনি সময় করে সপ্তাহে তিন দিন আপনার চুলে স্প্রে করবেন।
স্প্রে করার সময় খেয়াল রাখবেন যেন পানিটি চুলের গোড়া অর্থাৎ আপনার মাথার ত্বক
পর্যন্ত ভালো করে লাগে। তাহলে দেখবেন কিছু দিনের মধ্যে আপনার নতুন চুল গজাবে এবং
চুল ঘন হতে থাকবে।
উপরে যে সমস্ত পদ্ধতি আপনার সাথে শেয়ার করা হয়েছে তার সমস্ত পদ্ধতিই আপনি চাইলে
ঘরে বসে তৈরি করে নিতে পারবেন। আপনাকে যে সমস্ত উপাদানের কথা বলা হয়েছে সে সব
গুলোই আপনি হাতের কাছেই পেয়ে যাবেন। সবগুলোই প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে তৈরি করা
সম্ভব। এবং সব পদ্ধতি গুলোই অনেক কার্যকরী। আপনি আপনার পছন্দ মতো যে কোনো একটি
পদ্ধতি বেছে নিয়ে হেয়ার মাস্ক তৈরি করতে পারবেন।
আপনার খাদ্য তালিকায় কারিপাতা যেভাবে যোগ করবেন
আপনার খাদ্য তালিকায় কারিপাতা যেভাবে যোগ করবেন তা হলো- প্রথমে আপনাকে কারি পাতা
পরিষ্কার পানিতে ধুয়ে নিতে হবে। তারপর এটিকে ভালো করে রোদে শুকাবেন। রোদে ভালো
করে শুকানো হয়ে গেলে আপনি এটি শুকনো অবস্থাতেই ব্লেন্ডারে ব্লেন্ড করে নিবেন।
তাহলে এটি একেবারে গুড়া অর্থাৎ মিহি হয়ে যাবে।
আরো পড়ুনঃ
সেই কারিপাতার গুড়া চাইলে আপনি আপনার তরকারিতে বা ভাতের সাথে মিশিয়ে খেতে পারেন।
এতে করে আপনার চুলের উপকারের পাশাপাশি আপনার হজম শক্তিরও বিকাশ ঘটবে। এছাড়াও আপনি
এই কারিপাতার গুড়া চায়ের সাথে মিশিয়ে পান করতে পারেন। চা বানানোর সময় চায়ে একটু
লেবুর রস এবং পরিমাণ মতো চিনি দিবেন তাহলে চা খেতে আরো দারুন লাগবে।
কারি পাতা খাওয়ার ক্ষেত্রে সতর্কতা
কারি পাতা খাওয়ার ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। এই কারি পাতা যেহেতু একটি
প্রাকৃতিক উপাদান সেহেতু এর কোনো ক্ষতিকর দিক নেই। কিন্তু তারপরেও কিছু কিছু
ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। যদি আপনার শরীরে বা মাথায় এলার্জি থেকে থাকে
তাহলে আপনি এটি ব্যবহারের ক্ষেত্রে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে পারেন। আবার অনেকে আছে
যাদের মাথায় জ্বালা পোড়া করে। তাদের ক্ষেত্রেও ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে ব্যবহার
করতে হবে। এবং সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ কথা হলো এই কারি পাতার বীজ কোনো প্রকারেই
খাওয়া যাবে না। কারণ এর বীজ অনেকটা বিষের মতো। এবং যারা গর্ভবতী তাদের ক্ষেত্রেও
এই কারি পাতার গুড়া খাওয়া যাবে না। তারা চাইলে তাদের চুলে লাগাতে পারবে কিন্তু
খাওয়ার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হবে।
শেষ কথাঃ চুলের যত্নে কারি পাতার ব্যবহার
চুলের যত্নে কারি পাতার ব্যবহার এর নিয়ম সম্পর্কে আশা করি অনেক কিছু বুঝতে ও
জানতে পেরেছেন। এই কারি পাতা অনেক প্রাচীন কাল থেকেই চুলের মহা ঔষুধ হিসেবে
ব্যবহার হয়ে আসছে। বর্তমানে এর চাহিদা ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই পোস্টটি যদি
আপনি মনোযোগ দিয়ে পড়ে থাকেন তাহলে আপনি এই কারিপাতার গুনাগুণ, ব্যবহারের উপায়, ও
সতর্কতা সম্পর্কে জানতে পেরেছেন।
আমরা অনেকেই আছি যে চুলকে অনেক ভালোবাসি। কিন্তু যত্নের অভাবে চুলের সৌন্দর্য
হারিয়ে ফেলি। আবার অনেকেই আছি যাদের চুল পড়ে, বয়স না হতেই চুল পেকে যায়। তাদের
জন্য আজকের এই পোস্টটি সেরা পোস্ট হবে বলে আমরা মনে করি। যদি আপনার কোনো বিষয়ে
জানার ইচ্ছা থাকে বা কোনো মতামত থাকে তাহলে আপনি নির্দ্বিধায় নিচে কমেন্টের
মাধ্যমে জানাতে পারেন।
এরকম আরো নতুন নতুন বিষয়ে আপডেট তথ্য পেতে আমাদের এই পিএমড্রিম আইটিকে ফলো করে
রাখতে পারেন। আমাদের এই ওয়েবসাইটে আপনি শিক্ষা ও স্বাস্থ্য, তথ্য ও প্রযুক্তি,
অনলাইন ইনকাম, ব্যবসা ইত্যাদি বিষয়ে তথ্য পেতে পারেন। যা আপনার জীবনকে বদলে দিতে
পারে। আমাদের এই চুলের যত্নে কারি পাতার ব্যবহার পোস্টটি অনেক ধৈর্য সহকারে পড়ার
জন্য আপনাকে আবারো অনেক ধন্যবাদ জানাই।
পি এম ড্রিম আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url