মরিঙ্গা পাউডার খাওয়ার সঠিক নিয়ম
আমরা অনেকেই জানি যে মরিঙ্গা পাউডার আমাদের শরীরের জন্য কতটুকু উপকারী। আবার
অনেকেই আমরা জানি না যে কোনটিকে মরিঙ্গা পাউডার বলে বা কিভাবে মরিঙ্গা পাউডার
তৈরি করা হয়। এই মরিঙ্গা পাউডার হলো এক ধরনের গুড়া যা সজনে পাতা থেকে তৈরি করা
হয়।
এই সজনে পাতার অনেক গুনাগুন রয়েছে যা আমাদের শরীরের প্রায় ৩০০টি রোগ নিরাময়
করতে সাহায্য করে থাকে। একে আবার অনেকে অলৌকিক পাতাও বলে থাকে। তাহলে চলুন দেরি
না করে জেনে নিই যে মরিঙ্গা পাউডার কি? কিভাবে তৈরি হয়? মরিঙ্গা পাউডার খাওয়ার
সঠিক নিয়ম? কি কি উপায়ে মরিঙ্গা পাউডার খাওয়া যায়? ইত্যাদি।
পোস্ট সূচিপত্রঃ মরিঙ্গা পাউডার খাওয়ার সঠিক নিয়ম
- মরিঙ্গা পাউডার কি?
- মরিঙ্গা পাউডারে কি কি উপাদান রয়েছে?
- মরিঙ্গা পাউডার খাওয়ার সঠিক নিয়ম
- মরিঙ্গা পাউডার কি কি উপায়ে খেতে পারবেন?
- চায়ের সাথে মিশিয়ে যেভাবে পান করবেন
- সালাদের সাথে খাওয়ার পদ্ধতি
- সরাসরি খাবেন যেভাবে
- জুসের সাথে খাবেন যেভাবে
- কেকের সাথে খাবেন যেভাবে
- বড়ি বানিয়ে খাবেন যেভাবে
- মরিঙ্গা পাউডার খেলে আমাদের শরীরে যে উপকার হয়
- মরিঙ্গা পাউডার খেলে কি কি সমস্যা হতে পারে?
- শেষ কথাঃ মরিঙ্গা পাউডার খাওয়ার সঠিক নিয়ম
মরিঙ্গা পাউডার কি?
মরিঙ্গা পাউডার বলতে সজনে পাতার গুড়াকে বোঝায়। যার বৈজ্ঞানিক নাম মরিঙ্গা
অলিয়েফ। এই সজনে পাতার গুড়া নিয়ম অনুযায়ী সেবন করলে আমাদের শরীরের প্রায় ৩০০ টি
রোগের নিরাময় হয়। এজন্য এই সজনে পাতার গুড়া বা মরিঙ্গা পাউডারকে অবহেলা করতে
নেই। এই মরিঙ্গা পাউডার তৈরীর জন্য প্রথমে সজনে পাতাকে ডাল থেকে একেবারে আলাদা
করা হয়।
আরো পড়ুনঃ
তারপর এটিকে রোদে ভালোভাবে এক থেকে দুই দিন শুকানো হয়। ভালো ভাবে
শুকানোর পর এটিকে ব্লেন্ডারের সাহায্যে গুড়া করা হয়। আর সেই গুড়াই মরিঙ্গা
পাউডার নামে পরিচিত। আপনি চাইলেই নিজের বাড়িতেই এটি খুব সহজেই তৈরি করতে
পারবেন। এই সজনে পাতার অলোকিক গুনের জন্য এই সজনে গাছকে মিরাকেল ট্রি বলা হয়ে
থাকে। এই মরিঙ্গা পাউডার আপনি কি কি উপায়ে খেতে পারবেন সেই বিষয়গুলো নিয়েও
বিস্তারিত আলোচনা করব।
মরিঙ্গা পাউডারে কি কি উপাদান রয়েছে?
মরিঙ্গা পাউডারে কি কি উপাদান রয়েছে তা জানা খুবই জরুরী। এটি না জানলে আপনার এই
সজনে পাতা খাওয়ার প্রতি কোনো রুচি আসবে না। যখন আপনি জানবেন যে এই মরিঙ্গা বা
সজনে পাতাতে অনেক পুষ্টিগুণ বিদ্যমান রয়েছে, এটি খেলে আপনার শরীরের অনেক কিছুরই
পরিবর্তন ঘটবে। তখন আপনি নিজে থেকেই এই মরিঙ্গা পাতা খেতে চাইবেন। এজন্য এই
মরিঙ্গা পাউডার খাওয়ার পূর্বে এটি জানা খুবই জরুরী। এই মরিঙ্গা পাউডারে অনেক
আয়রণ রয়েছে যা আমাদের শরীরের অনেক ধরনের ঘাটতি মেটায়।
যেমন- আয়রন আমাদের শরীরে
না থাকলে রক্তশূন্যতা, মাথা ঘোরা, বিরক্তি, মাথা ব্যাথা ইত্যাদি সমস্যা দেখা
দেয়। এগুলো সমস্যা দূর করতে হলে অবশ্যই আপনাকে এই মরিঙ্গা পাউডারের শরণাপন্ন
হতে হবে। তাহলে আপনি এইগুলো রোগ থেকে মুক্তি পাবেন। এছাড়াও এতে রয়েছে জিংক যা
আমাদের শরীরের ক্ষত দ্রুত সারাতে কাজে লাগে। এগুলো যেগুলো উপাদান এই মরিঙ্গা
পাউডারে রয়েছে সেগুলো অনেক গুনে ভালো এবং আমাদের শরীরের জন্য খুবই কার্যকরী। এই
জন্যই এই মরিঙ্গা পাউডারকে অলৌকিক পাতা নামে আখ্যায়িত করা হয়েছে।
মরিঙ্গা পাউডার খাওয়ার সঠিক নিয়ম
মরিঙ্গা পাউডার খাওয়ার সঠিক নিয়ম আছে কি না এ নিয়ে অনেকের মনে একটি প্রশ্ন
থেকেই যায়। বর্তমানে আপনি, আমি সকলেই বুঝি যে প্রতিটা জিনিস সেবন করা বা খাওয়ার
একটি সুনির্দিষ্ট সময় রয়েছে। নিজের খেয়াল খুশিমত খেলে হয় না। এই জন্য ডাক্তার
আমাদেরকে একেক সময় ঔষধ খেতে বলে। ঠিক তেমনি এই মরিঙ্গা পাউডার খাওয়ারও কিছু
সঠিক নিয়ম রয়েছে। এই নিয়ম গুলো অক্ষরে অক্ষরে পালন করলে বা মেনে চললে খুবই
তাড়াতাড়ি ফলাফল পাওয়া যায়। বিশেষজ্ঞগণের মতে এই মরিঙ্গা পাউডার সকালে এবং
রাত্রে খেলে ভালো হয়। এখন প্রশ্ন হলো খাওয়ার আগে নাকি পরে খাব? সাধারনত এই
মরিঙ্গা পাউডার খাওয়ার আগে অর্থাৎ খালি পেটে খেলে অনেক উপকার হয়।
খালি পেটে
খেলে এটি আপনার শরীরে খুব দ্রুত ছড়িয়ে যাবে এবং আপনি আপনার শরীরে ভালো ফলাফল
লক্ষ্য করবেন। সকালে ঘুম থেকে উঠেই খালি পেটে যদি এটি খেতে পারেন তাহলে খুবই
ভালো হয়। এছাড়াও আপনি যদি না সকালে খালি পেটে না খেতে পারেন তাহলে আপনি রাত্রে
খাবেন। সারা দিনের কর্মক্লান্তির পর আমরা বাসায় ফিরে খাওয়া দাওয়া করে বিশ্রাম
করি। সেই সময় আমাদের সকল অঙ্গ স্থির থাকে এবং আমাদের শরীরের রক্ত প্রবাহ অনেক
বৃদ্ধি পায়। এজন্য রাত্রে সেবন করতে পারলে মরিঙ্গা পাউডারের সকল উপাদান আমাদের
সারা শরীরে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। আশা করি বিষয়টি ভালো ভাবে বুঝতে পেরেছেন।
মরিঙ্গা পাউডার কি কি উপায়ে খেতে পারবেন?
মরিঙ্গা পাউডার কি কি উপায়ে খেতে পারবেন এই প্রশ্নের উওর যদি আপনি জানতে পারেন
তাহলে আপনি আপনার রুচিমত এটি সেবন করতে পারবেন। এই জন্য আমরা এই পদ্ধতিগুলো
আপনাদের সাথে সহভাগিতা করছি। এই মরিঙ্গা পাউডার এমন একটি আয়ুর্বেদিক উপাদান
যেটি সব ভাবেই খাওয়া যায়। আপনি চাইলে এই মরিঙ্গা পাউডার এটি কাঁচা সেবন করতে
পারবেন
আবার সেদ্ধ করেও খেতে পারবেন আবার চাইলে রোদে শুকিয়ে গুড়া করে খেতে
পারবেন। তাহলে বুঝতেই পারছেন যে এই মরিঙ্গা পাউডার পাওয়া যেমন সহজলভ্য তেমনি
সেবনের ক্ষেত্রেও অনেক সুবিধা রয়েছে। এখন আমরা দেখব যে কি কি উপায়ে মরিঙ্গা
পাউডার খাওয়া যাবে।
চায়ের সাথে মিশিয়ে যেভাবে পান করবেন
আমরা যদি সকালে কথা চিন্তা করি তাহলে বুঝতে পারব। সকালে আমরা সবাই চা পান করে
থাকি। সেই চায়ের সাথে ১ থেকে ২ চা চামুচ বা প্রায় ৫ থেকে ১০ গ্রাম মরিঙ্গা
পাউডার মিশিয়ে পান করতে পারলে ভালো হবে। এতে করে আপনার কোনো রকম অসুবিধা হবে
না। এইভাবে খেলে আপনার শরীরে দ্রুত পরিবর্তন হবে। যেহেতু আমরা সকালে খালি পেটে
থাকি সেহেতু এই পদ্ধতি অনুসরণ করলে বুঝতেই পারছেন যে কত দ্রুত ফলাফল পাওয়া
সম্ভব হবে।
বর্তমানে বাজারে অনেক ধরনের মরিঙ্গা চা কিনতে পাওয়া যাচ্ছে। এটি
দুইরকম ভাবে বিক্রয় হয়ে থাকে। একটি হলো টি ব্যাগ আকারে এবং আরেকটি চা পাতার
মতো। আপনার যেটি ভালো লাগে সেটি ক্রয় করে ব্যবহার করতে পারেন। তবে ক্রয়ের
ক্ষেত্রে একটু যাচাই করে নিবেন যে সেটি পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন কি না। বিশেষ করে
যেগুলো চা পাতা আকারে বিক্রয় হয় সেগুলো। এই চা বাজারে আশার ফলে আপনার কষ্ট
অনেকখানি লাঘব হচ্ছে। আপনাকে শুধু সেই মরিঙ্গা চা বাজার থেকে ক্রয় করতে হবে এবং
চায়ের সাথে মিশিয়ে পান করতে হবে।
সালাদের সাথে খাওয়ার পদ্ধতি
সালাদের সাথে খাওয়ার পদ্ধতিটাও অনেক সহজ। আমরা অনেক সময় আমাদের মুখের রুচি
বর্ধনের জন্য বিভিন্ন সালাদ খেয়ে থাকি। যেমনঃ শশার সালাদ, টমেটোর সালাদ, আমের
সালাদ/ভর্তা, গাজরের সালাদ, আলুর ভর্তা ইত্যাদি। এই সমস্ত সালাদ বা ভর্তার সাথে
মিশিয়ে খেলেও ভালো উপকার পাওয়া যায়। যখন আপনি কোনো সালাদ বা ভর্তা তৈরি করবেন
তখন আপনি
আরো পড়ুনঃ
এই মরিঙ্গা পাউডার অল্প পরিমানে দিয়ে তাতে কিছু খাওয়ার তেল (সরিষার
তেল হলে বেশি ভালো হয়) দিয়ে ভালোভাবে মাখিয়ে নিলেই আপনার মরিঙ্গা পাউডারের
সালাদ বা ভর্তা তৈরি হয়ে যাবে। আমরা অনেকেই ভাবি যে এই মরিঙ্গা পাউডার দিলে
খাবারের সাধ নষ্ট হয়ে যাবে কি না। মোটেও না, এটি দিলে খাবারের সাধ নষ্ট হয় না
বরং বৃদ্ধি পায়। তবে আপনি যদি বেশি পরিমাণ মরিঙ্গা পাউডার ব্যবহার করেন তাহলে
সমস্যা হবে, এই জন্য পরিমাণ মতো দিতে হবে।
সরাসরি খাবেন যেভাবে
সরাসরি খাবেন বলতে এখানে আপনাকে মরিঙ্গা পাউডার চামুচ দিয়ে বা হাতে এক চিমটি
নিয়ে খেতে হবে এমনটাই বোঝানো হচ্ছে। তবে এইভাবে অনেকেই খেতে পারে না। সকলের
এইভাবে খাওয়ার অভ্যাস নাও থাকতে পারে। কারন এই মরিঙ্গা পাউডার হলো একটি শুকনো
খাবার। সুতরাং পানি ছাড়া খাওয়া একটু কষ্টকর আছে।
আপনার অভ্যাস না থাকলে এটি
আপনার গলায় আটকে যেতে পারে। এই জন্য যদি আপনার অভ্যাস না থেকে থাকে তাহলে আপনি
এই মরিঙ্গা পাউডার সরাসরি সেবন করতে যাবেন না। অন্যান্য পদ্ধতি গুলো অনুসরণ করে
সেবন করবেন।
জুসের সাথে খাবেন যেভাবে
আমরা অনেক সময় নিজের শরীরের ক্লান্তি দূর করার জন্য একটু ঠান্ডা পানীয় গ্রহণ
করে থাকি। এই ঠান্ডা পানি সেবন করার সময় আপনি অল্প পরিমাণ মরিঙ্গা পাউডার দিয়ে
ভালো ভাবে মিশিয়ে পান করে থাকেন তাহলে আপনার শরীরের ক্লান্তি তো দূর তো হবেই
সেই সাথে আপনি আপনার শরীরে এক ধরনের প্রশান্তি অনুভব করবেন।
কেকের সাথে খাবেন যেভাবে
আমরা অনেকেই বিভিন্ন ধরনের কেক খেতে পছন্দ করি। এজন্য কারো জন্মদিন বা কারো
বিবাহ বার্ষিকি বা অন্যান্য কোনো অনুষ্ঠানে কেক খেয়ে থাকি। আবার অনেকেই এমনি
খাওয়ার জন্য কেক কিনে থাকি। আপনি যখন কেক খাবেন তার আগে কেকের উপরে একটু
মরিঙ্গা পাউডার ছিটিয়ে দিবেন তারপর কেকটি খাবেন। তাহলে আপনার এক ঢিলে দুই পাখি
মারার মতো অবস্থা হয়ে যাবে। একদিকে আপনার কেকও খাওয়া হবে আবার অপরদিকে আপনার
মরিঙ্গা পাউডারও খাওয়া হয়ে যাবে। আশা করি বিষয়টি বুঝতে পেরেছেন।
বড়ি বানিয়ে খাবেন যেভাবে
এই পদ্ধতিটি অনেক জনপ্রিয় একটি পদ্ধতি। এটি চাইলেই আপনি আপনার বাসায় বসে নিজেই
তৈরি করতে পারেন। আমরা বাড়িতে দেখি মাঝে মাঝে আমাদের মায়েরা অনেক ধরনের বড়া
তৈরি করে আমাদের খাওয়াতেন। সেই একই নিয়মে আপনি বড়া বা আপনি যদি পিয়াজি বানাতে
পারেন তাহলে সেটাতে ময়দা মাখানোর সময় আপনি পরিমাণ মতো মরিঙ্গা পাউডার দিয়ে
ভালোভাবে মাখিয়ে বড়া বা পিয়াজি বানাবেন এবং সেটি ভাত খাওয়ার সময় বা এমনি খেতে
পারেন। এই ভাবে খেলে অনেক স্বাদ পাওয়া যায় এবং খাওয়ার রুচি বৃদ্ধি পায়। এই
পদ্ধতি যদিও একটু সময়সাপেক্ষ ব্যাপার কিন্তু অনেক মজাদার। আপনি চাইলেই এটি করতে
পারেন।
মরিঙ্গা পাউডার খেলে আমাদের শরীরে যে উপকার হয়
মরিঙ্গা পাউডার খেলে আমাদের শরীরে যে উপকার হয় তা জানা খুবই জরুরী। এটি জানলে
আপনি বুঝতে পারবেন যে আপনার শরীরে কোন উপাদানের ঘাটতি রয়েছে এবং সেই ঘাটতি
পূরণের জন্য আপনার মরিঙ্গা পাউডার খাওয়া ঠিক হবে কি না। আমরা পূর্বেই আলোচনা
করেছি যে এই মরিঙ্গা পাউডার প্রায় ৩০০টি রোগের নিরাময় করতে সক্ষম। তবে এখানে
একটি গুরুত্বপূর্ণ কথা হলো এই মরিঙ্গা পাউডার কিন্তু কোনো ঔষধ নয়। এটি শুধু
মাত্র একটি প্রতিষেধক মাত্র। এটি আপনাকে নিয়মিত সেবন করতে হবে তাহলে আপনার
শরীরের সকল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
আরো পড়ুনঃ
বর্তমানে যে সমস্ত রোগ বেশি পরিমানে দেখা দিচ্ছে সেই সমস্ত রোগের ক্ষেত্রে কেমন
উপকার পাওয়া যাবে সেই বিষয়টি আপনাদের সাথে সহভাগিতা করব। আপনি যদি এই মরিঙ্গা
পাউডার নিয়মিত সেবন করে থাকেন তাহলে আপনার শরীরের আর্সেনিক বিষাক্ততা দূর হয়ে
যাবে এছাড়াও যেগুলো উপকার পাবেন সেগুলো হলো-
- রক্তে কলেস্টেরলের পরিমাণ কমায়
- শরীরে শর্করার মাত্রা কমায়
- লিভার সুরক্ষিত থাকে
- রক্তচাপ কমায়
- পাকস্থলীর সমস্যা সমাধান করে
- অ্যাজমা নিরাময় করে
- ক্যান্সার প্রতিরোধ করে
- দৃষ্টি শক্তি বৃদ্ধি করে
- ত্বক ও চুল ভালো রাখে
- শরীরের ব্যাথা, কান ব্যথা, মাথা ব্যাথা দূর করে
এছাড়াও আরো অনেক সমস্যার সমাধান করে থাকে এই মরিঙ্গা পাউডার। আপনাকে শুধুমাত্র
নিয়মিত আপনার পছন্দ অনুযায়ী একটি পদ্ধতি অবলম্বন করে এই মরিঙ্গা পাউডার সেবন
করতে হবে। তাহলেই আপনি ভালো ফলাফল পাবেন।
মরিঙ্গা পাউডার খেলে কি কি সমস্যা হতে পারে?
মরিঙ্গা পাউডার খেলে কি কি সমস্যা হতে পারে এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। আমরা
অনেকের মুখেই শুনে থাকি যে মরিঙ্গা পাউডার খেলে অনেক ধরনের সুবিধা পাওয়া যায়,
এর কোনো ধরনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই ইত্যাদি আরো অনেক তথ্য। এগুলো সবই সঠিক
কিন্তু এই মরিঙ্গা পাউডারের কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া না থাকলেও এর কিছু সমস্যা
রয়েছে। আমরা এই পোস্টের মধ্যে অনেক জায়গায় বলেছি যে ৫ থেকে ১০ গ্রাম খাবেন বা
পরিমাণমতো খাবেন। এই কথাটি বলার পেছনে কিছু কারণ বিদ্যমান রয়েছে। এই কারণ গুলোই
এখন আপনাদের সাথে সহভাগিতা করব-
- এই মরিঙ্গা পাউডার বেশি পরিমানে খেলে আপনার শরীরে অনেক সমস্যা হতে পারে। এই মরিঙ্গা পাউডার সারা দিনে ৭০ গ্রামের বেশি খাওয়া যাবে না। বা প্রাপ্ত বয়স্কদের জন্য ১ থেকে ২ চামুচ এর বেশি খাওয়া যাবে না। বেশি খেলে আপনার পেটে যন্ত্রণা শুরু হতে পারে, মাথা ব্যাথা করতে পারে, বমি ভাব হতে পারে বা আপনার খাওয়ার রুচি হারিয়ে যেতে পারে। তখন আপনার ক্ষুধা লাগবে ঠিকই কিন্তু আপনি খেতে পারবেন না।
- আপনার যদি পেশার থাকে এবং তার জন্য আপনি যদি কোনো ডাক্তারের পরামর্শে ঔষধ সেবন করে থাকেন তাহলে আপনি এই মরিঙ্গা পাউডার খেতে পারবেন না। কারণ আপনি যখন আপনার পেশার নিয়ন্ত্রণের জন্য ঔষধ সেবন করবেন তখন আপনার পেশার নিয়ন্ত্রণে থাকবে। সেই সময় যদি আবার আপনি এই মরিঙ্গা পাউডার সেবন করেন তাহলে আপনার শরীরের রক্তে কলেস্টেরলের পরিমাণ আরো কমে যাবে ফলে আপনার পেশারের মাত্রা অনেক কমে যাবে। এই জন্য এই পেশারের ঔষধ সেবন করার সময়কালে মরিঙ্গা পাউডার ব্যবহার করা যাবে না।
- আপনি যদি গর্ভবতী হয়ে থাকেন তাহলে এই মরিঙ্গা পাউডার সেবন করা থেকে একেবারে বিরত থাকুন। কারণ গর্ভবতী কালীন সময়ে আপনি যদি এই মরিঙ্গা পাউডার সেবন করে থাকেন তাহলে আপনার সন্তানের ক্ষতি হতে পারে। কারণ এই মরিঙ্গা পাউডারে যে ডাল গুলো থেকে যায় সেই ডালগুলো আপনার জন্য খুবই ক্ষতিকর হয়ে দাঁড়াবে। এজন্য গর্ভবতী কালীন সময়ে এই মরিঙ্গা পাউডার খাওয়া থেকে বিরত থাকাটাই ভালো হবে।
- আপনার যদি আগে থেকেই কিডনির সমস্যা থেকে থাকে তাহলে আপনাকে এই মরিঙ্গা পাউডার খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। কারণ কিডনির সমস্যা থাকা কালীন সময়ে যদি আপনি এই মরিঙ্গা পাউডার খেয়ে থাকেন তাহলে আপনার কিডনির সমস্যা আরো বৃদ্ধি পাবে। এই জন্য এই সময় মরিঙ্গা পাউডার না খাওয়াই শ্রেয়।
- এছাড়াও অতরিক্ত মরিঙ্গা পাউডার সেবনের ফলে যদি আপনার কোনো রকম সমস্যা হয় তাহলে আপনি তৎক্ষণাৎ ডাক্তারের শরণাপন্ন হবেন। এজন্য এই মরিঙ্গা পাউডার খাওয়ার ক্ষেত্রে একটু সতর্ক থাকা ভালো।
- আপনি যদি বাজার থেকে মরিঙ্গা পাউডার কিনে থাকেন তাহলে কেনার সময় অবশ্যই এর উপযুক্ততা দেখে কিনবেন। খোলা মরিঙ্গা কেনা থেকে বিরত থাকবেন। যেগুলো মরিঙ্গা পাউডার প্যাকেটজাত করে বিক্রয় করা হয় সেগুলো ক্রয় করার চেষ্টা করবেন। আর সবচেয়ে ভালো হয় আপনি যদি নিজে আপনার বাড়িতে এটি তৈরি করে সেবন করেন। তাহলে আপনি এর উপযুক্ততার বিষয়ে নিশ্চিত থাকবেন।
শেষ কথাঃ মরিঙ্গা পাউডার খাওয়ার সঠিক নিয়ম
মরিঙ্গা পাউডার খাওয়ার সঠিক নিয়ম সম্পর্কে আশা করি আপনি ভালো ভাবে জানতে
পেরেছেন। এই পোস্টটি ভালোভাবে পড়লে আপনার এই মরিঙ্গা পাউডার নিয়ে আর কোনো
সন্দেহ থাকার কথা না। আপনি এই পোস্টটি পড়ে জানতে পেরেছেন মরিঙ্গা পাউডার কি?
এটি কিভাবে তৈরি করা হয়? কিভাবে খাওয়া যায়? এটি খেলে কি কি উপকার হয় এবং কি কি
সমস্যা হয় ইত্যাদি।
আমাদের এই পোস্টটি মনোযোগ ও ধৈর্য সহকারে পড়ার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ ও
কৃতজ্ঞতা জানাই। এই ধরনের আরো পোস্ট পড়ার জন্য আমাদের এই ওয়েবসাইটকে ফলো করে
রাখুন। এছাড়াও আপনি আমাদের এই ওয়েবসাইটে বিভিন্ন শিক্ষা বিষয়ক, তথ্য প্রযুক্তি
বিষয়ক, সাস্থ্য বিষয়ক, অনলাইন ইনকাম বিষয়ক পোস্ট পাবেন যা আপনার জীবনের মূল
চালিকা শক্তি হিসেবে কাজ করবে।
পি এম ড্রিম আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url