পুরাতন দলিল বের করুন খুব সহজে নিজের মোবাইল দিয়ে

কারেন্ট বিল বের করার সঠিক নিয়মসমূহপ্রিয় পাঠক আসসালামু আলাইকুম, আপনি কি আপনার দলিল নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন। ভাবছেন পুরাতন দলিল বের করুন খুব সহজে নিজের মোবাইল দিয়ে এই কথাটি কি সত্য নাকি মিথ্যা। নিজের নামে দলিল আছে তবুও অন্য লোক আপনার জমি দখল করার চেষ্টা করছে। চিন্তার কোনো কারণ নেই।

এখন আপনি আপনার ঘরে বসে আপনার হাতে থাকা মোবাইল ফোন দিয়ে খুব সহজেই আপনার নিজের জমির দলিল বের করতে পারবেন। আজকের এই পোস্টে আমরা আপনার জমির দলিল কিভাবে আপনার হাতে থাকা মোবাইল ফোন দিয়ে বের করবেন তা সম্পূর্ণ গাইডলাইন আজকে সহভাগিতা করব।

• পুরাতন দলিল বের করুন খুব সহজে নিজের মোবাইল দিয়ে
• দলিল নিবন্ধন কি
• সম্পত্তির দলিল কি?
• ভূমি অফিসে গিয়ে আপনার দলিলের তথ্য যাচাই করার নিয়ম
• পুরাতন দলিল বের করার ধাপসমূহ
• মালিকের নাম দিয়ে পুরাতন দলিলের তথ্য বের করা সম্ভব
• পুরাতন দলিলের কেন মালিকানা বের করা প্রয়োজন
• শেষ কথাঃ পুরাতন দলিল বের করুন খুব সহজে নিজের মোবাইল দিয়ে

পুরাতন দলিল বের করুন খুব সহজে নিজের মোবাইল দিয়ে এই কথাটি শুনে আপনার মনে হতে পারে যে আসলেই কি এই কাজটা করা সম্ভব? এর উত্তর হবে হ্যাঁ, বর্তমান যুগ হলো ডিজিটাল যুগ, এই যুগে ঘরে বসে নিজের হাতে থাকা মোবাইল দিয়ে অনেক কিছু করা সম্ভব হচ্ছে। শুধু মাত্র এর জন্য আপনার থাকতে হবে আপনার কাঙ্ক্ষিত বিষয় সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা। আজকে আমরা আপনাকে দেখাব  যে কিভাবে আপনি আপনার হাতে থাকা মোবাইল দিয়ে পুরাতন দলিল বের করতে পারবেন। এর জন্য আপনার কাছে থাকতে হবে একটি স্মার্ট ফোন এবং তার সাথে ইন্টারনেট সংযোগ। 

তাহলেই আপনি খুব সহজেই খুব অল্প সময়ের মধ্যেই পুরাতন দলিল বের করতে পারবেন। বর্তমানে আপনি ১৯৬৫ সাল হতে ২০২৫ সাল পর্যন্ত সকল জমির বা বাড়ির মালিকের তথ্য বের করতে পারবেন। আপনি চাইলেই আপনার জমির বা বাড়ির দলিল বের করতে পারবেন না কারণ এখনো অনলাইনে দলিল বের করার সিস্টেম চালু হয়নি। আপনি শুধুমাত্র আপনার জমি বা বাড়ির মালিকের নাম দিয়ে তার জমির পরিমাণ, দাগ নং সহ কয়েকটি তথ্য জানতে পারবেন যা আপনার জমির মালিকানা পেতে অনেক খানি সাহায্য করবে। তবে আপনার সেই জমি বা বাড়ি অবশ্যই অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন করা থাকতে হবে। 

যদি আপনার সেই জমি বা বাড়ির দলিল অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন করা না থাকে তাহলে আপনি কখনোই সেই জমির দলিল অনলাইনে বের করতে পারবেন না। তাই প্রথমেই আপনাকে নিশ্চিত করতে হবে যে আপনার বাড়ি বা জমি অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন করা আছে কি না। যদি আপনার জমি বা বাড়ি রেজিস্ট্রেশন করা থাকে তাহলে আপনি নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করতে পারেন। আর যদি রেজিস্ট্রেশন করা না থাকে তাহলে আপনাকে অবশ্যই আপনার নিকটস্থ ভূমি অফিসে গিয়ে প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করতে হবে। আশা করি বুঝতে পেরেছেন।

আমরা আমাদের প্রতিদিনের চলার পথে অনেক দরকারী জিনিষ ক্রয় করে থাকি। তবে যখন আমরা একটু বড় ধরনের জিনিষ ক্রয় করি তখন আমাদেরকে সেই জিনিষের সাথে একটি কাগজ বা প্রমাণ পত্র বা দলিলের মতো একটা কপি দেওয়া হয়। এই কাগজের ধরন নির্ধারন হয়ে থাকে যে আপনি কোন ধরনের জিনিষ ক্রয় করবে তার উপর। যেমন আমরা সকলেই জানি যে জমি ক্রয় করার সময় মালিকপক্ষ ক্রেতাকে তার জমির সকল কাগজপত্র দিয়ে থাকেন। জমির সেই কাগজপত্র গুলোকেই সাধারণত দলিল বলা হয়। 

যখন কোনো ক্রেতা জমি ক্রয় করে তখন তার নামে সরকারি ভূমি অফিসে একটা ফাইল ওপেন হয়। যা আমরা নিবন্ধন বলে জানি। জমি কার কাছ থেকে কত দামে ক্রয় করা হলো সেই সমস্ত তথ্য সেখানে নথিভুক্ত করা হয়। নথিভুক্ত করা হলে তখন সেই সকল তথ্য গুলো সরকারি একটা ওয়েবসাইটে রাখা হয় যেন ভবিষ্যতে কোনো সমস্যা না হয়। যখনই আমাদের প্রয়োজন হয় তখনই আমরা অনলাইনে ভূমি রেকর্ড ও ম্যাপ সেবার ওয়েবসাইটে গিয়ে সকল তথ্য খুব সহজেই নিজের হাতে থাকা স্মার্ট ফোন দিয়ে বের করতে পারি।

আমরা যখন কোনো জমি বা বাড়ি কিনে থাকি তখন আমাদেরকে একটি নথি দেওয়া হয়। সেই নথিতে খুব সুস্পষ্টভাবে লিখা থাকে যে সেই জমি বা বাড়ির মালিক আমি বা আপনি। সেই কাগজকেই মূলত সম্পত্তির দলিল বলে। এই দলিল ছাড়া আমাদের কখনোই কোনো জমি বা বাড়ি কেনা উচিত নয়। কারণ দলিল ছাড়া জমি বা বাড়ি কিনলে ভবিষ্যতে অন্য কেউ এসে দাবি করতে পারে যে এটি তার জমি বা বাড়ি। তখন আমরা যথাযোগ্য প্রমাণ না দেখাতে পারলে জমি বা বাড়ি আমাদেরকে হারাতে হবে। সেজন্য আমাদের উচিত জমি বা বাড়ি ক্রয় করার সময় অবশ্যই এর দলিল যাচাই বাছাই করা। তাহলে ভবিষ্যতে জমি বা বাড়ির সকল সমস্যা থেকে সহজে মুক্তি পাওয়া সম্ভব হবে।

অনেক সময় আমাদের জমি-জমা নিয়ে অনেক সমস্যা হয়ে থাকে। পূর্বে এই সকল সমস্যার সমাধানের জন্য আমাদেরকে আমাদের নিকটস্থ ভূমি অফিসে যেতে হতো। সেখানে গিয়ে আমাদের জমির সত্যতা যাচাইয়ের জন্য আমাদের সেখানে গিয়ে খতিয়ান নম্বর দিলেই আমদের জমির সকল তথ্য দিয়ে দিত। সেখানে গেলেই আমরা বুঝতে পারতাম যে আমরা আমাদের জমির প্রকৃত মালিক কি না। কিন্তু বর্তমানে এর জন্য আমাদেরকে আর কষ্ট করে ভূমি অফিসে যেতে হয় না। জমির মালিকানা যাচাই এর জন্য এখন আমাদের হাতে একটি স্মার্ট ফোন থাকলেই যথেষ্ট। 

এখন আমরা আমাদের হাতে থাকা স্মার্ট ফোন দিয়েই জমির মালিকানা যাচাই বাছাই করতে পারি। আপনার জমি যদি অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন করা থাকে এবং আপনার কাছে যদি আপনার জমির খতিয়ান থেকে থাকে তাহলে আপনি খুব সহজেই আপনার জমির সকল তথ্য বের করতে পারবেন। কিভাবে আপনার হাতে থাকা স্মার্ট ফোন দিয়ে আপনার দলিলের তথ্য যাচাই করবেন তার নিয়ম আমরা একটু পরেই আলোচনা করব। আশা করছি শেষ পর্যন্ত আমাদের সাথেই থাকবেন।

পুরাতন দলিল বের করার প্রথম ধাপ হলো আপনাকে শুরুতেই নিশ্চিত হতে হবে যে আপনার জমি বা বাড়ি অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন করা আছে কি না। যদি থাকে তাহলে আপনাকে ভূমির নির্দিষ্ট ওয়েবসাইটে যেতে হবে। সেখানে গিয়ে আপনার আপনার প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে পূরণ করতে হবে। আপনার সুবিধার জন্য নিচে একটি ছবি প্রদান করা হলো-

উপরের ছবি দেখে আপনি নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন যে কিভাবে আপনার জমির/বাড়ির তথ্য দিবেন। এখন প্রশ্ন হলো এগুলো তথ্যগুলো আপনি কোথায় থেকে পাবেন? এই তথ্য গুলো আপনি আপনার জমির বা বাড়ির খতিয়ান থেকেই পাবেন। এর জন্য আপনাকে অবশ্যই অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। অথবা আপনার যদি উক্ত তথ্য গুলো মনে থাকে তাহলে আপনি খুব সহজেই আপনার জমি বা বাড়ির সকল তথ্য বের করে ফেলতে পারবেন।

মালিকের নাম দিয়ে পুরাতন দলিলের তথ্য বের করা সম্ভব এবং সেটা আপনি আপনার বাসায় বসে থেকে আপনার হাতে থাকা মোবাইল ফোন দিয়েই খুব সহজেই বের করে ফেলতে পারবেন। সেজন্য আপনাকে আপনার হাতে থাকা স্মার্ট ফোনে ইন্টারনেট সংযোগ ঠিক আছে কি না তা নিশ্চিত করতে হবে। তারপর আপনার ফোনের যেকোনো একটি সার্চ ইঞ্জিনে গিয়ে সার্চ বারে লিখবেন "ভূমি রেকর্ড ও ম্যাপ সেবা" তাহলে আপনার সামনে কিছু ওয়েবসাইট শো করবে। সেখান থেকে আপনি নিচের ছবিতে দেওয়া ওয়েবসাইটে প্রবেশ করবেন।

ওয়েবসাইটে প্রবেশ করার পর আপনি আপনার জিমেইল দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করে নিবেন। তারপর ওয়েবসাইটের যে অংশে সার্ভে খতিয়ানের তথ্য রয়েছে সেখানে জমির মালিকের তথ্য সঠিকভাবে দিবেন। সমস্ত তথ্য দেওয়া হলে খুঁজুন বাটনে ক্লিক করবেন তাহলেই আপনার সামনে উক্ত জমির মালিকের সকল তথ্য চলে আসবে। তবে এখানে আবারো আপনাকে স্মরণ করে দিতে চাই যে, আপনার জমি যদি অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন করা না থাকে তাহলে আপনি আপনার জমির কোনো তথ্য অনলাইনে খুঁজে পাবেন না। এজন্য অবশ্যই আপনাকে অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। তবে যদি আপনার জমি অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন করা থাকে এবং আপনার কাছে যদি মালিকের কোনো তথ্য না থাকে তাহলে আপনি শুধু জমির দাগ নম্বর এবং মালিকের নাম দিয়েই জমির সকল তথ্য বের করে ফেলতে পারবেন খুব সহজে। 

পুরাতন দলিলের মালিকানা বের করা আমাদের খুবই প্রয়োজক। বিশেষ করে যাদের পূর্ব পুরুষের অনেক জমি জমা ছিল তাদের জন্য এটি অনেক দরকার। তাদের জমি যদি অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন করা থাকে তাহলে তাদের পরবর্তী প্রজন্ম খুব সহজেই তাদের প্রকৃত জমি খুঁজে পেতে পারবে। আমাদের আশে পাশে বসবাসরত মানুষগুলোর মধ্যেই আমরা দেখি যে তারা জমি জমা নিয়ে অনেক ঝগড়া, মারামারি করে। জমি নিজের বলে হাতিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। এই ধরনের সমস্যা সমাধানের জন্য অবশ্যই জমি অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন করে রাখতে হবে।

 

তাহলে পরবর্তীতে তারা অনলাইনেই জমির সকল তথ্য বের করতে পারবে। এতে করে কেউ কারো জমি, জায়গা দখল করতে পারবে না। আর কেউ দখল করার আগে যদি অনলাইনে প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে সকল তথ্য যাচাই বাছাই করে তাহলে তার জন্যও জমি দখল করা অনেকটা সহজ হয়ে যায়। এজন্য সবথেকে গুরুত্ব পূর্ণ বিষয় হচ্ছে জমি সঠিক তথ্য দিয়ে অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন করা। আশা করি বিষয়টি ভালোভাবে বুঝতে পেরেছেন।

পুরাতন দলিল বের করুন খুব সহজে নিজের মোবাইল দিয়ে এই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে শেষ পর্যন্ত পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। এই আর্টিকেলে আমরা আপনাদের সাথে সহভাগিতা করার চেষ্টা করেছি যে আপনি কিভাবে আপনার জমির মালিকানা ঠিক রাখবেন এবং কি করলে আপনার পরবর্তী প্রজন্ম গুলো আপনার এই জমির সঠিক মালিকানা পাবে কোনো ঝামেলা ছাড়াই। এছাড়াও আমরা আলোচনা করেছি দলিল নিবন্ধন কি? কিভাবে আপনি ঘরে বসে আপনার জমির মালিকানা যাচাই করতে পারবেন ইত্যাদি।

আশা নয় বিশ্বাস করি যে এই আর্টিকেলটি পড়ে আপনি অনেক কিছু জানতে ও বুঝতে পেরেছেন। আমাদের এই সাইটে আমরা নিয়মিত আর্টিকেল প্রকাশ করে থাকি। এই সাইটে আপনি জানতে পারবেন তথ্য ও প্রযুক্তি, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য, ইসলামিক শিক্ষা, ব্যবসা টিপস ইত্যাদি। তাই সকল ধরনের আপডেট ইনফরমেশন পেতে আমাদের এই পিএমড্রিম আইটির পাশে থাকুন। ধন্যবাদ।