ডুমুর ফলের উপকারিতা ও অপকারিতা
আমরা অনেকেই অনেক শাক সজি খেতে অনেক পছন্দ করি কারণ শাক সবজি আমাদের শরীরের অনেক
পুষ্টি যোগায় এবং আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। ঠিক তেমনি একটি
সবজি রয়েছে যেটি আমাদের সকলেরই চেনা।
আপনি হয়ত ডুমুর এর নাম শুনে থাকবেন। এই ডুমুর এক ধরনের সবজি। এটির মধ্যে অনেক
পুষ্টিগুণ বিদ্যমান রয়েছে। এটি অনেক রোগের প্রতিষেধক হিসেবে কাজ করে। তাই ডুমুর
সম্পর্কে জানতে হলে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ুন।
পোস্ট সূচিপত্রঃ ডুমুর ফলের উপকারিতা ও অপকারিতা
- ডুমুর কি? ডুমুর ফলের উপকারিতা ও অপকারিতা
- ডুমুর ফলের মধ্যে কি কি উপাদান রয়েছে?
- ডুমুর ফল এর উপকারিতা-ডুমুর ফল খেলে কি হয়?
- ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে ডুমুরের ব্যবহার
- দেশি ডুমুরের উপকারিতা
- ত্বীন ফল কি ডুমুর?
- গোখাদ্য হিসেবে ডুমুরের পাতা ব্যবহার
- ডুমুর খাওয়ার নিয়ম
- ডুমুরের অপকারিতা। বেশি ডুমুর খেলে কি হয়?
- এক নজরে ডুমুর ফলের সকল পুষ্টি উপাদান দেখে নিন
- শেষ কথাঃ ডুমুর ফলের উপকারিতা ও অপকারিতা
ডুমুর কি? ডুমুর ফলের উপকারিতা ও অপকারিতা
ডুমুর হলো এক ধরনের ফল। একে আমরা অনেকে সবজি হিসেবেও জানি। এই ডুমুর ফলের অনেক উপকারিতা এবং কিছু অপকারিতা রয়েছে। আমাদের এই দেশের অনেক জেলায় ডুমুর পাওয়া যায়। যেমন- রাজশাহী, চাঁপাই, খাগড়াছড়ি, বান্দরবান, মৌলভীবাজার, টাঙ্গাইল ইত্যাদি জায়গায় অনেক ডুমুর পাওয়া যায়। এই ডুমুরের অনেক ধরনের প্রজাতি রয়েছে। ধারণা করা হয় যে আমাদের এই পুরা বিশ্বের মধ্যে প্রায় ৮০০ প্রজাতির ডুমুর রয়েছে।
আরো পড়ুনঃ ভাতের মাড় খাওয়ার নিয়ম
আমাদের দেশে সাধারণত কয়েক ধরনের ডুমুর দেখতে পাওয়া যায়। যেমন- জগডুমুর, এর
বৈজ্ঞানিক নাম হলো Ficus Recemosa এই ফল অনেকেই আমরা রান্না করে খাই। আবার আমাদের দেশে আরেক ধরনের ডুমুর দেখতে পাওয়া যায় যেটি আমরা পিপল নামে চিনে থাকি। এই পিপল ডুমুর বৈজ্ঞানিক নাম হলো Ficus Religious, এই ডুমুর অনেকেই না চিনে থাকলেও এর পাতা দেখলে চেনা যায় কারণ এর পাতা দেখতে সুচালো। আরেক রকমের ডুমুর রয়েছে যেটির নাম আঞ্জির। এটি আমাদের বাংলাদেশে বেশি পরিমাণ পাওয়া যায়। এই ফল আমরা অনেকেই কাঁচা খেতে পছন্দ করি আবার কেউ রান্না করে খেয়ে থাকি। এটি আকারে একটু বড়
হয়ে থাকে। এই ফল আফগানিস্তান থেকে শুরু করে পর্তুগাল পর্যন্ত চাষাবাদ করা হয় এবং
একইসাথে বিভিন্ন দেশে রপ্তানি করা হয়।
ডুমুর ফলের মধ্যে কি কি উপাদান রয়েছে?
ডুমুর ফলের মধ্যে অনেক উপাদান রয়েছে যা কল্পনা করা যায় না। এই ডুমুর ফল খেলে আমাদের শরীরের অনেক উপকার হয় এবং সেই সাথে আমাদের শরীরের অনেক রোগ প্রতিরোধ হয়। এই ডুমুর ফলের মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে খনিজ পদার্থ আর ভিটামিন। এই উপাদানগুলোই আমাদের কাজ কর্ম করার জন্য শরীরে শক্তি যোগায় এবং আরেকটি কার্যকরী উপাদান রয়েছে যার নাম হচ্ছে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট।
এই অ্যান্টি অক্সিডেন্ট এর কারণে আমাদের শরীরের টিস্যুগুলো ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা
করে এবং আমাদের ত্বককে করে তোলে আগের তুলনায় অনেক উজ্জ্বল। সেই সাথে আমাদের
স্বাস্থ্যকেও করে আরো উন্নত। আপনি যদি ১০০ গ্রাম ডুমুর খেয়ে থাকেন তাহলে আপনি
এখান থেকে প্রায় ৩৭ কিলোক্যালরি খাদ্যশক্তি, ভিটামিন এ বি ও সি সহ ক্যারোটিন
পাবেন যা আপনার শরীরকে আরো চাঙ্গা করে তুলবে।
ডুমুর ফল এর উপকারিতা-ডুমুর ফল খেলে কি হয়?
ডুমুর ফল এর উপকারিতা-ডুমুর ফল খেলে কি হয়? এ বিষয়ে আমাদের অনেকরই মনে প্রশ্ন রয়েছে। এটি যেহেতু একটি প্রাকৃতিক সবজি। তাই এর মধ্যে কোনো ধরনের ভেজাল লক্ষ করা যায় না। এই ফল খেলে আপনি আপনার শরীরে অনেক পরিবর্তন লক্ষ করবেন। এই ফলের মধ্যে অনেক পুষ্টি উপাদান বিদ্যমান রয়েছে যার কারণে ডাক্তারগণ এই ফল খাওয়ার জন্য অনেক রোগীকে উৎসাহ প্রদান করে থাকে। এই ডুমুর ফল খেলে আপনি আপনার শরীরে কত ধরনের উপকার পাবেন চলুন জেনে নেওয়া যাক-- হজম শক্তি বাড়ায়- এই ডুমুর ফলের মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার যা আপনার পরিপাকতন্ত্রের বা পাচনতন্ত্রের কার্যকারিতা বৃদ্ধি করার মাধ্যমে আপনার হজম শক্তি বৃদ্ধি করবে।
- কোষ্ঠকাঠিন্ন দূর করে- আমাদের পরিবারে অনেক মানুষ থাকে যাদের অনেক দিন ধরে পায়খানা হয় না বা পায়খানা করতে অনেক কষ্ট হয়। একে আমরা কোষ্ঠকাঠিন্ন রোগ বলে থাকি। এই রোগ থেকে মুক্তির ভালো উপায় হলো ডুমুর ফল খাওয়া। ডুমুর ফল খেলে আপনার পেটের সমস্ত সমস্যা দূর করে দিবে এবং আপনার কোষ্ঠকাঠিন্ন দূর হয়ে যাবে।
- ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে- আপনার যদি ডায়াবেটিস থেকে থাকে তাহলে আপনি নিয়ম করে প্রতিদিন দুই থেকে তিনটা ডুমুর কাঁচা বা পানিতে ভিজিয়ে খেতে পারেন। এই ডুমুর খেলে আপনার শরীরের রক্তে শর্করার সামঞ্জস্যতা বজায় রাখে। এবং আপনার রক্তে কলেস্টেরলের পরিমাণ কমিয়ে দেয় এবং ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে।
- হাড় মজবুত করে- এই ডুমুর ফল খেলে আপনার শরীরের হাড়ের মধ্যে যদি ক্যালসিয়ামের ঘাটতি থাকে তাহলে সেটা পূরণ হয়ে যাবে এবং আপনার হাড়কে করবে অনেক শক্তিশালী। কারণ এই ডুমুরের মধ্যে রয়েছে ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, আর ফসফরাস যা হাড়কে ভেতর থেকে মজবুত করতে সাহায্য করে।
- ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে- আমরা অনেকেই আছি যারা না চাইলেও দিনে দিনে মোটা হয়ে যাচ্ছি বা শরীরের ওজন দিনে দিনে বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাদের জন্য এই ডুমুর অনেক উপকারী একটি সবজি। এই ডুমুরে রয়েছে ফাইবার যা আমাদের পাচনতন্ত্রের কার্যকারিতা বজায় রাখে। কারণ ডুমুর একটি ভারি খাবার এটি খেলে আপনার পেটে অনেকক্ষণ থাকবে ফলে আপনার ক্ষুধা লাগবে না। যার জন্য আপনার ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে।
- উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে- এই ডুমুর খেলে আপনার উচ্চ রক্তচাপ হবার আসঙ্কা কমে যাবে। কারণ এই ডুমুরে আছে সোডিয়াম, পটাসিয়াম। এগুলো উপাদান আপনাকে উচ্চ রক্তচাপ থেকে রক্ষা করবে।
- হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়- আমাদের পরিবারে অনেক বয়স্ক লোক থাকে যাদের হার্টের সমস্যা থাকে। তাদের যে কোনো সময় হার্টে রক্ত জমাট বেঁধে যেতে পারে এবং হার্ট এ্যাটাক হতে পারে। এই সমস্যা সমাধানে আপনি ডুমুর খেতে পারেন। এই ডুমুরে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়।
- হিমোগ্লোবিন ঠিক রাখে- ডুমুর ফলের মধ্যে আয়রন রয়েছে যা আমাদের শরীরে হিমোগ্লোবিন ঠিক রাখতে সাহায্য করে।
- চোখের দৃষ্টি শক্তি বৃদ্ধি করে- আমাদের অনেকেরই চোখে বিভিন্ন ধরনের ছোট খাট সমস্যা হয়ে থাকে এবং আমরা মাঝেমধ্যে চোখে কম দেখি। এই ডুমুরে থাকে ভিটামিন যা আমাদের চোখের জন্য অনেক উপকারী। এই ডুমুর খেলে আপনার চোখের দৃষ্টি শক্তি বৃদ্ধি পাবে, চোখের স্বাস্থ্যের উন্নতি বৃদ্ধি করে এবং রেটিনার প্রতিরোধ হিসেবে কাজ করে।
- গলা ব্যথা কমায়- আমাদের অনেক সময় গলা ব্যাথা করে এবং কোনো কিছু খেয়ে শান্তি পায় না। খেতে অনেক কষ্ট হয়। এই সমস্যা সমাধানের জন্য আপনি প্রথমে পানি একটু কুসুম গরম করবেন এবং ডুমুর সিলপাটায় বেটে বা ব্লেন্ডারে বেটে পেস্ট তৈরি করে কুসুম গরম পানির সাথে গুলিয়ে আপনার গলায় লাগাবেন। খেয়াল করবেন যেন একবারে পানি পানি যেন না হয়। তাহলে দেখবেন আপনি অনেক আরাম বোধ করবেন।
- গর্ভবতী মহিলাদের জন্য ভালো- আপনার পরিবারে যদি কোনো গর্ভবতী মহিলা থেকে থাকে তাহলে আপনি এই ডুমুর তাকে প্রতিদিন পরিমাণ মতো খাওয়াতে পারেন। এই ডুমুরে রয়েছে অনেক আয়রন যা গর্ভবতী মহিলার শরীরের আয়রনের ঘাটতি মেটাবে।
- কিডনি ভালো রাখে- আমাদের শরীরের মধ্যে যদি কিডনির কোনো সমস্যা হয় তাহলে এই ডুমুর খেলে অনেকাংশেই কিডনিতে আরাম পাওয়া যায়। অনেকের কিডনিতে পাথর হয়ে থাকে। সেই পাথরকে প্রতিরোধ করতে হলে ডুমুর পানিতে ফুটিয়ে নিয়ে সেই জল কিছুদিন পান করত হবে তাহলেই দেখবেন আপনার কিডনিতে পাথর হওয়া থেকে রক্ষা পাবে।
- বার্ধক্য দূর করে- আমরা অনেক সময় দেখি যে অনেক মানুষের বয়স না হতেই বৃদ্ধার মতো দেখা যায়। তাদের এই বার্ধক্য দূর করতে ডুমুর অনেক উপকারী। এই ডুমুরে রয়েছে লহো ও ইস্ট্রজেন যা শরীরের কোষ গুলোকে ভালো রাখে ফলে মানুষের বয়স বোঝা যায় না।
- যৌন শক্তি বৃদ্ধি করে- এই ডুমুর যদি প্রতিদিন দুই থেকে তিনটা খাওয়া যায় তাহলে আপনার যৌন শক্তি বৃদ্ধি পাবে। কারণ এর ভেতরে এমন সব উপাদান রয়েছে যা আপনার প্রজনন শক্তি বৃদ্ধিতে অনেক সহায়ক হিসেবে কাজ করে।
- স্তন ক্যান্সারে ঝুঁকি কমায়- আপনার পরিবারের কোনো মেয়ে বা মহিলা যদি স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি থাকে তাহলে আপনি তাকে ডুমুর খাওয়াতে পারেন। এই ডুমুর নিয়মিত খেলে আপনার স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি অনেকাংশেই কমে যাবে।
- ফোঁড়া পাকাতে সাহায্য করে- আমাদের অনেক সময় অনেক জায়গায় ফোঁড়া হয়ে থাকে। যেগুলো অনেক কষ্টদায়ক হয়ে থাকে। সেই ফোঁড়া পাকাতে হলে আপনাকে এই ডুমুর ব্যবহার করতে হবে। দুধের সাথে কিছু ডুমুর সিদ্ধ করে সেই ফোঁড়াতে লাগালে আপনার ফোঁড়া খুব দ্রুত পেকে যাবে।
- হাঁপানি প্রতিরোধ করে- আপনার বা আপনার পরিবারে যদি কারো হাঁপানি থেকে থাকে তাহলে আপনি এই ডুমুরের সাথে একটু মেথি ও মধু মিশিয়ে খান তাহলে আপনি অনেক আরাম পাবেন।
ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে ডুমুরের ব্যবহার
ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে ডুমুরের ব্যবহার অনেক কার্যকরী। আমাদের মুখে অনেক সময় অনেক ব্রণ হয় যা আমাদের চেহারাকে কুৎসিত করে তোলে। তখন বাইরে বের হতে ইচ্ছে করে না। তাদের এই সমস্যা সমাধানের জন্য ডুমুর ব্যবহার করা যেতে পারে। এই ডুমুরের পেস্ট তৈরি করে মুখে লাগালে আপনার মুখের ব্রণ অনেক কমে যাবে। কয়েকদিন একটানা ব্যবহার করলে আপনার মুখের উজ্জ্বলতা ফিরে আসবে।
আরো পড়ুনঃ চুলের যত্নে কারি পাতার ব্যবহার
সেই সাথে আপনি যদি আপনার চুলকে আরো সৌন্দর্য মন্ডিত করতে চান তাহলে এই ডুমুর
ব্যবহার করতে পারেন। এই ডুমুর আপনার চুলে লাগালে আপনার চুল রেশম কোমল হবে যা
দেখতে অনেক সুন্দর লাগবে। এবং আপনার আকর্ষনের মূল হাতিয়ার হয়ে উঠবে আপনার চুল।
আবার এই ডুমুর খেলে আপনার হাতের ও পায়ের নখও ভালো থাকবে।দেশি ডুমুরের উপকারিতা
দেশি ডুমুরের উপকারিতা বলতে অনেক কিছুই বলা যায়। দেশি ডুমুরের গাছ আমরা প্রায় সকলেই চিনে থাকি। আমাদের বাড়ির আশে পাশে এই দেশি ডুমুরের গাছ অনেক দেখতে পাওয়া যায়। এই ডুমুর দেখতে অনেকটা ছোট আকারের হয়ে থাকে। এই ডুমুর কাঁচা অবস্থায় সবুজ বর্ণের হয়ে থাকে এবং পাকলে এটি লালচে বর্ণের হয়ে থাকে। এই দেশি ডুমুরের গাছ খুব বেশি বড় হয় না। একসাথে থোকা থোকা অনেকগুলো ডুমুর ধরে থাকে।
আর এই ডুমুর ফল অন্যান্য ফলের মতো গাছের ডগায় ধরে না। এই ফল গাছের ডালে ডালে ধরে।
এই ডুমুর ফলের ভেতরে ছোট ছোট বীজ থাকে এবং এটি কাটলে সাদা আঠালো বর্ণের কষ বের
হয়। এই দেশি ডুমুর ফল আমরা আমাদের দেশে বেশিরভাগ সময় রান্না করে খায় এবং কেউ কেউ
ভর্তা করেও খায়। এই দেশি ডুমুর আমাদের শরীরকে অনেক রোগ হতে রক্ষা করে। যেমন
গুটিবসন্ত, ডায়াবেটিস, হৃদরোগ, কিডনি ও মূত্র সংক্রান্ত সমস্যা, স্নায়ুবিক
দূর্বলতা, মস্তিস্কের শক্তি বৃদ্ধি, সর্দি কাশি, টিউমার ও স্ত্রী রোগের চিকিৎসায়
অনেক কার্যকর।
ত্বীন ফল কি ডুমুর?
ত্বীন ফল কি ডুমুর এই কথাটি আমরা অনেকেই ভেবে থাকি। কারণ এই ত্বীন ফল অনেকটা ডুমুরের মতোই দেখতে হয়। এটি সাধারণত বিদেশী ফল যা আমাদের দেশে ডুমুর নামেই চিনে থাকে। এই ত্বীন ফলটি সাধারণত মরু এলাকায় ভালো জন্মে কিন্তু বর্তমানে বাংলাদেশেও এই ত্বীন ফল ৩৬৫ দিনই চাষ করা সম্ভব হচ্ছে।
এই ত্বীন ফল দেখতে একটু বড় আকারের হয় এবং এটি ফল হিসেবেই খাওয়া হয়। এই ত্বীন ফলেও
অনেক পুষ্টি উপাদান রয়েছে। বাংলাদেশে এই ত্বীন ফলকে সাধারণত ডুমুর বলেই সকলে
চিনে। তাই বলা যায় যে ত্বীন ফলও এক ধরনের ডুমুর।
গোখাদ্য হিসেবে ডুমুরের পাতা ব্যবহার
গোখাদ্য হিসেবে ডুমুরের পাতা ব্যবহার করা হয়। আমাদের দেশে বেশির ভাগ গ্রামাঞ্চলে এই ডুমুরের পাতা গরু, ছাগলকে খাওয়ায় থাকে। এই পাতাতেও অনেক পুষ্টগুণ বিদ্যমান রয়েছে যা গরু খেলে গরুর শরীরে অনেক চাহিদা পূরণ হয়। এই ডুমুরের পাতা অনেকটা সিরিজ কাগজের মতো।
আরো পড়ুনঃ মরিঙ্গা পাউডার খাওয়ার সঠিক নিয়ম
এই পাতা ব্যবহার করে অনেকেই মাগুর মাছ ও সিং মাছ পরিষ্কার করতে কাজে লাগে। এই
পাতা অনেক ধারালো হওয়ায় অনেক দ্রুত মাছ পরিষ্কার করা যায়। এছাড়াও এই ডুমুর গাছের
ছাল, মূল অনেক কাজেই ব্যবহার হয়ে থাকে। এক কথায় এই ডুমুর গাছ পুরোটাই একটি ঔষুধি
গাছ।
আবার অনেকেই আছে যারা ডুমুর রান্না করে খেতে ভালোবাসেন। ডুমুরের সাথে একটু আলু মিশিয়ে ভাজি করলে অনেক স্বাদ লাগে। আবার কেউ ছোট মাছ দিয়ে ডুমুরের ঝোল রান্না করে। আবার চাইলে আপনি ডুমুর সেদ্ধ করে ভর্তা করে খেতে পারেন বা সালাদ বানিয়ে খেতে পারেন। আপনার যদি এভাবে খেতে সমস্যা হয় তাহলে আপনি ডুমুর এবং দুধ একসাথে মিশিয়ে একটি শরবত তৈরি করে খেতে পারেন। অনেকেই আবার মিষ্টির সাথে খেয়ে থাকেন। আপনিও চাইলে খেতে পারেন। যেভাবেই খান না কেন এটির পুষ্টিগুণ কমে না বরং অনেক বৃদ্ধি পায়।
ডুমুর খাওয়ার নিয়ম
ডুমুর খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে আমাদের অবশ্যই জানা প্রয়োজন। মানুষ হিসেবে আমাদেরকে খাবার দাবার এর বিষয়ে একটু সতর্কতা অবলম্বন করে খাওয়া উচিত। তাই এই ডুমুর খাওয়ার ক্ষেত্রেও আমাদের কিছু নিয়ম মানতে হবে। এই ডুমুর আপনি শুকনা বা ভিজিয়ে খেতে পারেন। অনেকেই আমরা কাঁচা খেতেই পছন্দ করি। তবে আপনি যদি এটি ভিজিয়ে খেতে চান তাহলে আপনাকে দুই থেকে তিনটা ডুমুর পানিতে ভিজিয়ে রেখে সকালে সেটা পানি সহ খেতে হবে। এই ডুমুর রাত্রের থেকে দিনে খেলে বেশি উপকার পাওয়া যায়। আপনি যদি প্রতিদিন এই ডুমুর খান তাহলে দেখবেন কাজের ক্ষেত্রে আপনি অনেক শক্তি পাবেন। অনেক ক্ষণ ধরে কাজ করার সামর্থ্য অর্জন করবেন।আবার অনেকেই আছে যারা ডুমুর রান্না করে খেতে ভালোবাসেন। ডুমুরের সাথে একটু আলু মিশিয়ে ভাজি করলে অনেক স্বাদ লাগে। আবার কেউ ছোট মাছ দিয়ে ডুমুরের ঝোল রান্না করে। আবার চাইলে আপনি ডুমুর সেদ্ধ করে ভর্তা করে খেতে পারেন বা সালাদ বানিয়ে খেতে পারেন। আপনার যদি এভাবে খেতে সমস্যা হয় তাহলে আপনি ডুমুর এবং দুধ একসাথে মিশিয়ে একটি শরবত তৈরি করে খেতে পারেন। অনেকেই আবার মিষ্টির সাথে খেয়ে থাকেন। আপনিও চাইলে খেতে পারেন। যেভাবেই খান না কেন এটির পুষ্টিগুণ কমে না বরং অনেক বৃদ্ধি পায়।
ডুমুরের অপকারিতা। বেশি ডুমুর খেলে কি হয়?
ডুমুরের অপকারিতা সম্পর্কে আলোচনা করার মতো তেমন কিছুই নেই। কারণ এটি যেহেতু একটি প্রাকৃতিক সবজি সেহেতু এর অপকারিতা বা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া তেমন নেই। তবে অনেকেরই মনে প্রশ্ন থাকে যে বেশি ডুমুর খেলে কি হয়? বা বেশি ডুমুর খেলে কোনো সমস্যা হবে কি না? এর উত্তর হলো হ্যাঁ। সব কিছুরই একটা সীমাবদ্ধতা থাকে। বেশি পরিমাণে ডুমুর খেলে আপনার বেশ কয়েকটি সমস্যা হবে। বেশি ডুমুর খেলে কি হয়? তা নিচে তুলে ধরা হলো-- আপনার শরীরে রক্তক্ষরণ হতে পারে
- আপনার মলদ্বারে রক্তপাত হতে পারে
- আপনার যোনি হালকা রক্তপাত হতে পারে
- ডায়রিয়া হবার সম্ভাবনা রয়েছে
- পেট ব্যথা হতে পারে
- ডুমুরে চিনির পরিমাণ বেশি তাই দাত পচে যেতে পারে
- আপনার যদি অ্যালার্জি থেকে থাকে তাহলে অ্যালার্জি আরো বেড়ে যেতে পারে
- আপনি যদি কোনো ঔষুধ খেতে থাকেন তাহলে এই ডুমুর খাওয়া থেকে দূরে থাকবেন
- আপনার যদি কোনো অপারেশন করার প্রয়োজন পড়ে তাহলে সেই অপারেশনের আগে ডুমুর খাওয়া থেকে দূরে থাকেবেন। কারণ ডুমুর খেলে শরীরের রক্তকে পাতলা করে ফেলে তাই আপনি যদি অপারেশনের সময় ডুমুর খান তাহলে আপনার রক্তশূন্যতা হতে পারে।
- এই ডুমুরে চিনির পরিমাণ বেশি থাকে তাই আপনার যদি ডায়াবেটিস বেশি থাকে তাহলে এই ডুমুর বেশি খাওয়া থেকে বিরত থাকবেন।
- আপনি যদি মোটা হয়ে থাকেন তাহলে এই ডুমুর একটু হিসেব করে খাবেন কারণ এটিতে চিনির পরিমাণ বেশি থাকে তাই আপনার ওজন আরো বেড়ে যেতে পারে।
- এই ডুমুর বেশি পরিমানে খেলে আপনার লিভারের সমস্যা হতে পারে।
তবে
বেশি পরিমানে খাবেন না তাহলেই আপনার আর কোনো সমস্যা হবে না। শুধু ডুমুরের
ক্ষেত্রেই নয়। আপনি যে কোনো খাবার গ্রহণ করবেন কিন্তু পরিমাণ মতো গ্রহণ করবেন
তাহলে আর কোনো সমস্যা হবে না। আর যখনি লোভে পড়বেন তখনি নানা সমস্যা নানা
রোগব্যাধি আপনার শরীরে বাসা বাঁধতে থাকবে।
এই ধরনের আরো নতুন নতুন পোস্ট বা আর্টিকেল পেতে আমাদের এই পিএম ড্রিম আইটি ফলো করে রাখুন। তাহলে সবার আগে আপনার কাছে নোটিফিকেশন যাবে। আমরা আমাদের এই ওয়েবসাইটে অনলাইন ইনকাম, তথ্য প্রযুক্তি, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য, ক্যালেন্ডার, ব্যবসা ইত্যাদি বিষয়ে আর্টিকেল পাবলিশ করে থাকি। আমাদের মূল লক্ষ্যই হলো আপনাদের জীবনকে পরিবর্তন করে এক নতুন সম্ভাবনাময়ের দ্বারপ্রান্তে পৌছে দেওয়া। ধন্যবাদ।
এক নজরে ডুমুর ফলের সকল পুষ্টি উপাদান দেখে নিন
আপনি যদি প্রতিদিন ১০০ গ্রাম ডুমুর খান তাহলে আপনি নিচের টেবিলে দেওয়া পুষ্টি উপাদান পাবেন। এই পুষ্টি উপাদান আপনি যদি প্রতিদিন গ্রহণ করতে পারেন তাহলে আপনার শরীরের সকল রোগ ব্যাধি দূর হয়ে যাবে। সেই সাথে আপনার শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে। তাই আমাদের উচিত প্রতিদিন দুই থেকে তিনটা ডুমুর সেবন করা। চলুন দেখে নেওয়া যাক প্রতি ১০০ গ্রাম ডুমুরে কি পরিমাণ খাদ্য উপাদান আছে-পুষ্টি উপাদানের নাম | পুষ্টি উপাদানের পরিমাণ |
---|---|
ভিটামিন বি১ | ০.৬ মিলিগ্রাম |
ভিটামিন বি২ | ০.৫ মিলিগ্রাম |
ভিটামিন সি | ৫ মিলিগ্রাম |
লৌহ | ১.১ মিলিগ্রাম |
ক্যালসিয়াম | ৮৮ মিলিগ্রাম |
শর্করা | ৭.৬ গ্রাম |
চর্বি | ০.২ গ্রাম |
আমিষ | ১.৩ গ্রাম |
খাদ্য শক্তি | ৩৭ গ্রাম |
হজম যোগ্য আঁশ | ২.২ গ্রাম |
জলীয় অংশ | ৮৮.১ গ্রাম |
খনিজ পদার্থ | ০.৬ গ্রা |
শেষ কথাঃ ডুমুর ফলের উপকারিতা ও অপকারিতা
ডুমুর ফলের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে আমরা অনেক কিছুই জানতে পারলাম। এই ডুমুরে কি পরিমাণ পষ্টি উপাদান রয়েছে এবং তা আমাদের শরীরে কিভাবে কাজে লাগে তার সব কিছুই এই আর্টিকেলে আমরা আলোচনা করা চেষ্টা করলাম। আশা করি মনোযোগ দিয়ে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়েছেন। এতক্ষন ধরে আমাদের সাথে থাকার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই।এই ধরনের আরো নতুন নতুন পোস্ট বা আর্টিকেল পেতে আমাদের এই পিএম ড্রিম আইটি ফলো করে রাখুন। তাহলে সবার আগে আপনার কাছে নোটিফিকেশন যাবে। আমরা আমাদের এই ওয়েবসাইটে অনলাইন ইনকাম, তথ্য প্রযুক্তি, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য, ক্যালেন্ডার, ব্যবসা ইত্যাদি বিষয়ে আর্টিকেল পাবলিশ করে থাকি। আমাদের মূল লক্ষ্যই হলো আপনাদের জীবনকে পরিবর্তন করে এক নতুন সম্ভাবনাময়ের দ্বারপ্রান্তে পৌছে দেওয়া। ধন্যবাদ।
পি এম ড্রিম আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url